দেশ বিভাগে ফিরে যান

সংসদের ডায়েরী – ১৮ই সেপ্টেম্বর

September 18, 2020 | 3 min read

ফিসফিস করবেন না

করোনার ঠেলায় প্রচুর রদবদল হয়েছে সংসদের নিয়মকানুনে। সাংসদদের বসার জায়গাও বদল হয়েছে। সাধারণ সময়ে দেখা যায়, অনেকেই নিজের জায়গা ছেড়ে অন্য সাংসদের জায়গায় গিয়ে বসে গল্প করেন। কেউ কেউ আবার ঝুঁকে কানে কানে ফিসফিস করে কথা বলেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের গাইডলাইন স্মরণ করিয়ে আজ চেয়ারম্যান বলেন, এমনটা করবেন না। তিনি সাংসদের অনুরোধ করেন তাঁর চেম্বারেও না যেতে। দরকারের চিরকুটে নিজেদের বক্তব্য লিখে পাঠাতে বলেন তিনি।

আমি কি দেশদ্রোহী?

কিছুক্ষণের জন্য উত্তপ্ত হল রাজ্যসভা। জিরো আওয়ারের শুরুতেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপিত করতে চাইছিলেন আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ। কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে অনুমতি দেননি। তাই, মাইক ছাড়াই তিনি নিজের বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। যার ফলে তিনি তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন চেয়ারম্যানের সাথে। তাকে বলতে শোনা যায়, আমি কি দেশদ্রোহী?

প্রথাভঙ্গ কেন্দ্রের

প্রথা ভেঙে দু’বছর পুরোনো খরচে শীলমোহর দেওয়ার জন্য সংসদের অনুমতি চাইল কেন্দ্রীয় সরকার। ১.৮৭ লক্ষ কোটি টাকার ব্যয়ের হিসেবে দিয়ে সংসদের অনুমতি চেয়েছে কেন্দ্র। যদিও, এর ফলে ভাঁড়ারে কোনও অতিরিক্ত চাপ পড়বে না। তবে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে সরকারি লাল-ফিতের ফাঁসে আয়-ব্যয়ের হিসেবও ব্যাহত হয়। যার ফলে, বিভিন্ন সরকারকে পুরোনো, ভ্রান্তিমূলক সংখ্যার বিচারে খরচের পরিকল্পনা করতে হয়।

মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরব অর্পিতা

করোনা, আম্পান এবং পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দাম বাড়ছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের। মূল্যবৃদ্ধির কারণে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। এরই মাঝে অত্যাবশ্যকীয় কৃষিপণ্য থেকে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার জন্য বিল এনেছে কেন্দ্র। যার ফলে দেশজুড়ে সঙ্কটে কৃষকরা। আজ এই বিষয়েই সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। তিনি কেন্দ্রের কাছে দাবি জানান কৃষক-বিরোধী বিল প্রত্যাহার করে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সদর্থক পদক্ষেপ নিয়ে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে।

বিপ্লবীদের সম্মানে সরব

সিপাহী বিদ্রোহের সময় থেকেই আন্দামান দ্বীপকে বন্দিশালা হিসেবেই ব্যবহার করত ব্রিটিশরা। ১৮৯৬ সালে এই জেল নির্মাণের কাজ শুরু হয় পাকাপাকিভাবে। সেই সময় ব্রিটিশদের ঘুম ছুটিয়ে দেওয়া বহু বিপ্লবীকে ‘কালাপানি’ তে দ্বীপান্তরিত করা হত। তাদের নামাঙ্কিত পাথর ফলক বসানো হয়েছিল এই জেলে। সম্প্রতি দেখা গেছে সেখান থেকে হাপিস বহু ফলক, যার বেশিরভাগই বাঙালি বিপ্লোবীদের নামাঙ্কিত। সেই সব ফলক ফেরানোর দাবিতে সরব হলেন সাংসদ মৌসম নূর।

সরকার নয় অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি

কেন্দ্রীয় সরকারকে আবারও আক্রমণ করলেন বিরোধী সাংসদ মনোজ ঝা। হোমিওপ্যাথি বিল নিয়ে বলতে গিয়ে তাঁর শ্লেষাত্মক মন্তব্য, এই সরকার আসলে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি। তারা কথায় কথায় অর্ডিন্যান্স জারি করেন। দুই অধিবেশনের মাঝের সময় বাই উঠলেই অর্ডিন্যান্স চাই। কোনওরকম বিশ্লেষণ দেওয়া হয় না, বিরোধীদের মত নেওয়া হয় না।

লিঙ্গ-নিরপেক্ষ হোক রাজ্যসভা

রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের প্যানেল থেকে আজ এনসিপি সাংসদ বন্দনা চবন সংসদের কার্যপ্রণালী চালাচ্ছিলেন। হোমিওপ্যাথি বিল নিয়ে বলতে উঠে মহারাষ্ট্রের সাংসদ বিকাশ মাহাত্মে বলেন, যারা চেয়ারম্যান পদে আসীন একজন মহিলা, দেখে ভালো লাগছে। কিন্তু, চেয়ারম্যান শব্দটি লিঙ্গ-নিরপেক্ষ নয়। বরং আমাদের বলা উচিত চেয়ারপার্সন। রাজ্যসভাকে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ হতে হবে।

কেন ব্রাত্য বাংলা?

হোমিওপ্যাথি কাউন্সিলে কেন ব্রাত্য বাংলা? রাজ্যসভায় সরব হলেন ডঃ শান্তনু সেন। তার মতে, বাংলায় হোমিওপ্যাথি ওষুধের চল খুব বেশি। তা সত্ত্বেও এই কাউন্সিলে বাংলাকে জায়গা দেওয়া হয়নি। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্ৰীয় কাঠামোকে সম্মান করে না কেন্দ্র। এমনকি মেডিক্যাল কমিশনও ঠুঁটো জগন্নাথ, মত ওনার। বাংলার থেকে স্বাস্থ্য কমিশনের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও ওনাকে কোনও সিদ্ধান্তের আগে কিছুই জানানো হয় না, বলেন ডঃ শান্তনু সেন।

গোমূত্রই ওষুধ?

করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন বিজেপি নেতা যেসব নিদান দিয়েছিলেন, তা নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন যে সরকার গোমূত্র সেবনের পরামর্শ দেয় তার থেকে আর কি আশা করা যায়। পাশাপাশি তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলা করতে রাজ্যগুলিকে পর্যাপ্ত সাহায্য করেনি কেন্দ্রীয় সরকার।

আত্মপ্রচার বন্ধ হোক

করোনা আবহে সাংসদদের মাইনে ৩০% হ্রাস করা নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছিল কেন্দ্র। আজ সেই অধ্যাদেশকে বিল হিসেবে সংসদে পেশ করে সরকার। এই বিল নিয়ে আলোচনার সময় মনোজ ঝা দাবি করেন আত্মপ্রচার বন্ধ করুক কেন্দ্র, বন্ধ হোক সরকারি বিজ্ঞাপন। যে অর্থ বাঁচবে, তাতে পরিকাঠামো উন্নয়ন হোক। উল্লেখ্য, দলমত নির্বিশেষে বিরোধী সাংসদরা এমপিল্যাড ফিরিয়ে আনার দাবি জানান

স্পিকারের পক্ষপাত

তপ্ত বাদানুবাদে আজ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লোকসভা। পিএম কেয়ার্স ফান্ড নিয়ে বলতে গিয়ে গান্ধী নেহরু পরিবারকে অপমান করেন মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। সেই থেকেই সূত্রপাত ঝামেলার। এরপর ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন শাসক-বিরোধী অনেক সাংসদ। স্পিকারের তরফে বলা হয় কেউ যদি উঠে দাঁড়িয়ে কথা বলেন, তাহলে তাকে সাসপেন্ড করা হবে। এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, স্পিকার শাসক দলের সদস্যদের কিছু বলেন না, কিন্তু বিরোধীদের শাসন করেন। এরপরই লোকসভা আধঘন্টার জন্য মুলতুবি করে দেন অধ্যক্ষ

পীড়িত অধ্যক্ষ

আজ লোকসভায় তুমুল হৈ হট্টগোল হয় অনুরাগ ঠাকুরের একটি মন্তব্যের পর। বাদানুবাদে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন অধ্যক্ষ বিজেপি সদস্যদের বিরুদ্ধে কিছু বলেন না। এরপরই দফায় দফায় মুলতুবি হয় কার্যপ্রণালী। এরপর সদনে ফিরে অধ্যক্ষ বলেন, তিনি পীড়িত। যদি তাঁর কথা কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকে, তাহলে তিনি দুঃখিত

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Parliament

আরো দেখুন