শেষ ৪ মাসে চাকরি হারিয়েছেন ৫৯ লক্ষ পেশাদার, বলছে সমীক্ষা
করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে দেশে কর্মক্ষেত্রে সঙ্কট বেড়েই চলেছে। বাড়ছে বেকারত্ব। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, শেষ চারমাসে প্রায় ৫৯ লক্ষ হোয়াইট কলার কর্মচারী বা কায়িক শ্রম করেন না এমন ব্যক্তি চাকরি হারিয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, অ্যাকাউন্ট্যান্ট, বিশ্লেষকরা। এমনকী বেকার হচ্ছেন চিকিৎসকরাও। তবে এর মধ্যে সেল্ফ এমপ্লয়েড কোয়ালিফায়েড প্রফেশনালদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে সমীক্ষায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, হোয়াইট কলার ডেস্ক এমপ্লয়ি অর্থাৎ যাঁরা ডেস্কে কাজ করেন বা বিপিও-তে কাজ করেন, এমন কর্মীদের উপর লকডাউনে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। কারণ, এই কর্মীদের বড় অংশই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ অর্থাৎ ঘর থেকে কাজ করেছেন।
সিএমআইই’র কনজিউমার পিরামিডস হাউজহোল্ড সার্ভে রিপোর্টেই উঠে এসেছে বেকারত্বের এই ভয়াবহ তথ্য। সেখানে বলা হচ্ছে, করোনার জেরে গত মার্চের শেষে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন শুরুর পর থেকেই মারাত্মকহারে বেকারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আনলক পর্ব শুরু হলেও সঙ্কট কাটছে না।
সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, ২০১৯ সালের মে থেকে আগস্টের মধ্যে হোয়াইট কলার পেশাদারদের ক্ষেত্রে দেশে ১ কোটি ৮৮ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হয়। সেই সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। গত বছরের সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর চারমাসে সেই সংখ্যার খুব একটা হেরফের হয়নি। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম চারমাসেই কর্মসংস্থান কমে হয় ১ কোটি ৮১ লক্ষ। রিপোর্ট বলছে, করোনার প্রভাব তখন থেকেই শুরু হয়। এরপর মে থেকে আগস্ট অর্থাৎ এই চারমাসে কর্মসংস্থান হঠাৎ করেই অনেকটা নেমে যায়। এই সময় কর্মসংস্থান হয় ১ কোটি ২২ লক্ষ। অর্থাৎ লকডাউন ও আনলক পর্বের চারমাসে ৫৯ লক্ষ পেশাদার কর্মী তাঁদের চাকরি খুইয়েছেন। আর যদি ২০১৯ সালের মে থেকে আগস্টের সঙ্গে এই সংখ্যা তুলনা করা যায়, তবে বলতে হয় চাকরি খুইয়েছেন প্রায় ৬৬ লক্ষ। এরই পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন শিল্পের শ্রমিকরা। গত বছরের তুলনায় এই সময় প্রায় ৫০ লক্ষ শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। লকডাউনের জেরে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কিংবা বন্ধ থাকায় তাঁদের অনেককেই কাজ হারাতে হয়েছে। লকডাউনের প্রভাব যে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উপর সবচেয়ে বেশি পড়েছে, সমীক্ষাতেই তা স্পষ্ট।