রোহিতদের হারিয়ে জয়ে আইপিএলে শুরু ধোনি ব্রিগেডের
করোনার চোখরাঙানি উপেক্ষা করেই শনিবার শুরু হল ত্রয়োদশ আইপিএল। টসের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। আর ম্যাচের পর মহেন্দ্র সিং ধোনি। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দু’জনেই ছিলেন প্রবল চাপে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পরিস্থিতি থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, সেটা ফের একবার দেখিয়ে দিলেন ভারতের সর্বকালের দুই সফল অধিনায়ক। অসম্ভবকে সম্ভব করে আরব দেশে কোটিপতি লিগকে বাস্তবায়িত করলেন মহারাজ। আর উদ্বোধনী ম্যাচেই মাহি বিজয় পতাকা ওড়ালেন নানা ঝড়ঝাপটা সামলে।
গত বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে মধুর বদলা নিল চেন্নাই সুপার কিংস। শেষ মরশুমে রোহিত শর্মার দলের কাছে মাত্র ১ রানে হেরে খেতাব হাতছাড়া হয়েছিল ধোনিদের। সেই আক্ষেপ মিটিয়ে সিএসকে বুঝিয়ে দিল, এবারও তারা প্রবলভাবেই চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে রয়েছে। দুই ক্রিকেটার সহ ১৩ সদস্য করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর আতঙ্কে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন সুরেশ রায়না। যা ছিল চেন্নাইয়ের কাছে বড় ধাক্কা। কিন্তু রায়নার অভাব ঢেকে দিলেন অম্বাতি রায়াডু। জয়ের জন্য ১৬৩ রান তাড়া করতে নেমে চেন্নাই শুরুতেই দুই প্রারম্ভিক ব্যাটসম্যানকে হারায়। মুরলী বিজয় (১) ও শেন ওয়াটসন (৪) যখন সাজঘরে ফেরেন, তখন দলের স্কোর মাত্র ৬। তার পরেও হাসতে হাসতে জিতল চেন্নাই (১৬৬/৫), চার বল বাকি থাকতেই।
প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ফাফ ডু’প্লেসি ও অম্বাতি রায়াডু তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন ১১৫ রান। সেটাই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় মুম্বইকে। রায়াডু যখন ৪৮ বলে ৭১ রানে আউট হলেন, তখন বেশ ভালো জায়গায় সিএসকে। ধোনি নিজে না নেমে পর পর পাঠিয়ে দেন জাদেজা (১০) ও স্যাম কুরানকে (১৮)। শেষ পর্যন্ত সাত নম্বরে নামতেই হয় মাহিকে। প্রথম বলেই তাঁকে কট বিহাইন্ড দিয়ে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে তিনি বেঁচে যান। যদিও তিনি খাতা খোলার আগেই নিশ্চিত হয়ে যায় তাঁর দলের জয়। ৫৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ডু’প্লেসি।
দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ধোনি। সিএসকে’র দুর্বল পেস বোলিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও কুইন্টন ডি’কক দ্রুত রান তোলেন। তখন মনে হয়েছিল, দু’শোর গণ্ডি হয়তো টপকে যাবে মুম্বই। কিন্তু বিপক্ষ দলের অধিনায়কের নাম যে এমএসডি। ৪৩৭দিন পর তিনি প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতে নেমেছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্কে এখনও মরচে পড়েনি। পঞ্চম ওভারেই মাহি বল তুলে দেন পীযূষ চাওলার হাতে। চতুর্থ বলেই তিনি ফেরান রোহিত শর্মাকে (১২)। গতির সঙ্গে স্যুইংকে হাতিয়ার করে স্যাম কুরানও নিজের প্রথম ওভারেই তুলে নেন কুইন্টন ডি’ককের (৩৩) উইকেট। সূর্যকুমার যাদব ও সৌরভ তিওয়ারি তৃতীয় উইকেটে ৪৪ রান যোগ করায় ঘুরে দাঁড়ায় মুম্বই। কিন্তু সেই জুটি দীর্ঘস্থায়ী হতে দেননি দীপক চাহার। সূর্যকুমার ১৭ রানে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। ফাফ ডু’প্লেসির দুটি অনবদ্য ক্যাচ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। পঞ্চদশ ওভারে জাদেজার প্রথম ডেলিভারিতে সৌরভ তিওয়ারির (৪২) ক্যাচ ধরে শরীরের টাল সামলাতে পারেননি ডু’প্লেসি। বাউন্ডারি টপকানোর আগেই বল শূন্যে ছূঁড়ে দিয়ে ফের তিনি ধরে নেন। পঞ্চম বলে হার্দিক পান্ডিয়ার (১৪) ক্যাচটিও দুরন্ত প্রয়াসে তালুবন্দি করেন প্রোটিয়া তারকাটি।