এক ধাক্কায় বেড়ে গেল স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম, চিন্তায় প্রবীণরা
আশঙ্কা মতোই একধাক্কায় অনেকটা বাড়ল স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম। সৌজন্যে, করোনা ভাইরাস। ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স কোম্পানি তাদের স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পে ওই খরচ বাড়িয়েছে। যে সব গ্রাহক নতুন করে এই সংস্থা থেকে পলিসি কিনবেন, তাঁদের এখনই বাড়তি টাকা দিতে হবে। যাঁরা পুরনো গ্রাহক আছেন, আগামী মাসে বিমা রিনিউয়ালের তারিখ থাকলে তখন গুনতে হবে বাড়তি খরচ।
ন্যাশনাল ইনসিওরেন্সের হেড অফিস কলকাতায়। পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা পূর্বাঞ্চলে তাদের ব্যবসা বেশি। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা নিউ ইন্ডিয়া অ্যাশিওরেন্সের হলেও, এরাজ্যে তাদের ব্যবসা তুলনামূলক কম। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত তাদের প্রিমিয়াম ধরাছোঁয়ার মধ্যে ছিল। এজেন্টরা বলছেন, আচমকা ওই সংস্থা প্রিমিয়াম বাড়িয়ে দেওয়ায় বহু এজেন্ট ন্যাশনাল ইনসিওরেন্সে চলে আসেন। এখানে প্রিমিয়াম তুলনামূলক কম। তাই গ্রাহক সংখ্যা বাড়তে থাকে হু হু করে। কিন্তু করোনা আবহে চিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী প্রিমিয়ামের ধাক্কায় এখন গ্রাহক কতটা ধরে রাখা যাবে, তা নিয়েই ধন্দে রয়েছেন এজেন্টরা। ইতিমধ্যেই অনেকে বেসরকারি বিমা সংস্থায় ঝুঁকতে শুরু করেছেন।
এজেন্টরা বলছেন, ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স গত জুলাই মাস থেকে স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে। কিন্তু যাঁরা ইতিমধ্যেই এই সংস্থার গ্রাহক রয়েছেন, তাঁদের তিন মাসের ‘গ্রেস’ বা ছাড় দেওয়া হয়। অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যাঁদের বিমা প্রকল্প রিনিউ করার কথা, তাঁরা পুরনো হারেই আগামী এক বছরের জন্য প্রিমিয়ামের খরচ চোকাতে পারবেন। কিন্তু ১ অক্টোবর বা তারপর যদি সেই রিনিউয়ালের তারিখ হয়, তাহলে নতুন হারে খরচ মেটাতে হবে।
জানা গিয়েছে, কম বয়সি যাঁরা বিমা পলিসি কিনবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে খরচের বহর বিরাট বাড়েনি। কিন্তু যাঁদের বয়স বেশি, বিশেষত প্রবীণরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন এই প্রিমিয়াম কাঠামোয়। ৬০ বা তার বেশি বয়সিদের জন্য প্রিমিয়াম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। প্রবীণরা বলছেন, রোগভোগ তাঁদেরই সবচেয়ে বেশি। সেক্ষেত্রে যদি স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামের অঙ্কই এত বড় হয়, তাহলে চিকিৎসা করানো কঠিন হয়ে যাবে।
ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স এতদিন বয়সের যে স্তর বা ‘স্ল্যাব’ অনুযায়ী প্রিমিয়াম নিত, তাতে কিছু রদবদল হয়েছে। গ্রাহকরা বলছেন, তাতে সামান্য দু’একটি ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামের অঙ্ক কমেছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খরচ বেড়েছে অনেকটা। করোনার আতঙ্কে অনেকেই স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আসতে চাইছেন। এই পরিস্থিতিতে তার খরচ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছে সাধারণ মানুষ।