কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

৪৪ হাজার বিপিএল ফর্মের ডিজিটাল করার পরিকল্পনা পুরসভার

September 21, 2020 | 2 min read

কলকাতা পুরসভার বিপিএল তালিকার অসঙ্গতি নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, প্রকৃত দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের নাম অনেক ক্ষেত্রে বাদ যায়। বদলে দারিদ্রসীমার উপরে বসবাসকারীদের নাম সংযোজিত হয় ওই তালিকায়। সেই সমস্যার সমাধানে ধাপে ধাপে বিপিএল সংক্রান্ত সব তথ্যকে ডিজিটাল রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কলকাতা পুর প্রশাসন। সেই মতো সম্প্রতি ৪৪ হাজার বিপিএল ফর্মের ডিজিটাল রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

পুরসভার ১৬টি বরো অফিসেই এই ডিজিটাল রূপ দেওয়ার কাজ হবে। তার প্রস্তুতিও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। ১৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিক ধাপের কাজ শেষ করা হবে। 

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কাজ যাতে দ্রুততার সঙ্গে করা যায়, তাই প্রতিটি বরোয় কমপক্ষে তিন জন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর থাকবেন। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘১৫ দিনে ৪৪ হাজার বিপিএল ফর্মের ডিজিটাল রূপ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তাই সে অনুযায়ী লোকবলও প্রয়োজন।’’

বছর দেড়েক আগে পুরসভার বিপিএল তালিকা আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছিল। প্রায় ১৮ হাজার পরিবারের নতুন ভাবে অন্তর্ভুক্তি ঘটেছিল বিপিএল তালিকায়। এমনিতে ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর বিপিএল তালিকা প্রকাশ করে পুরসভা। শেষ বার এই পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ হয় ২০১৪-’১৫ সালে। পরের বছর (২০১৫-’১৬) তালিকার কাজ হলেও সেটি 

প্রকাশ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত পরিমার্জন ও সংশোধন করে ওই বছরে একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয় পুর প্রশাসন। সেই মতো সংশ্লিষ্ট খসড়া তালিকা বরো চেয়ারম্যানদের (বর্তমানে বরো কোঅর্ডিনেটর) কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল পুরসভা।

সেই খসড়াতেই দেখা গিয়েছিল যে, ১৮ হাজার ৮৮৭টি পরিবার বিপিএল তালিকায় নতুন ভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ শহরে বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারের সংখ্যাবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৪-’১৫ সালে শহরে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারের সংখ্যা যেখানে ছিল ২ লক্ষ ৮৯ হাজার ১৩২, সেখানে নতুন সংযোজনের ফলে পরের বছর ওই সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৩ লক্ষ ৮ হাজার ১৯। অর্থনীতিবিদদের একাংশ জানিয়েছিলেন, এক বছরে ১৮ হাজার পরিবারের নতুন করে বিপিএল তালিকাভুক্ত হওয়াটা শহরের অর্থনীতির পক্ষে মোটেই ভাল চিত্র নয়।

যদিও পুর কর্তৃপক্ষের যুক্তি ছিল, বিপিএল তালিকার পরিমার্জন, সংশোধনের কাজ ধারাবাহিক ভাবে চলে। ফলে তালিকায় পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে শহরের অর্থনীতিকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। যে সব পরিবারের নাম এত দিন কোনও কারণে বিপিএল তালিকায় ছিল না, তাঁদের নাম তোলা হয়েছে। ফলে সরকারি পরিষেবার আওতায় আরও অনেককে আনা সম্ভব হচ্ছে, যাঁরা এত দিন ব্রাত্য ছিলেন। তবে সেই খসড়া তালিকা বরো কোঅর্ডিনেটরদের কাছে পাঠানোর পর থেকে তা আর চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা যাচ্ছে। ২ নম্বর বরো কোঅর্ডিনেটর সাধন সাহা এ বিষয়ে বলেন, ‘‘দেড় বছর আগেই ওই খসড়া আমাদের পাঠিয়েছিল পুরসভা। তার পরে সেটা চূড়ান্ত হয়ে এখনও হাতে আসেনি।’’ যদিও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট তালিকা ‘আপডেট’ করে তা প্রকাশ করা হবে বলেই ওই ফর্মগুলির ডিজিটাল রূপ দেওয়ার কথা হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Ration cards, #KMC, #BPL Card

আরো দেখুন