কৃষি বিলের প্রতিবাদে ২৫শে সড়ক অবরোধ বাংলায়
বিরোধীদের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও কৃষি ও কৃষক স্বার্থ সংক্রান্ত তিনটি বিল রবিবারই সংসদে পাশ করিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। এই অবস্থায় বিভিন্ন রাজ্যে কৃষক সংগঠনগুলি তেড়েফুঁড়ে কেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে। বাদ থাকছে না পশ্চিমবঙ্গও। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) গোটা দেশের সঙ্গে বাংলাতেও বিভিন্ন কৃষক সংগঠন যৌথভাবে পথে নামার কথা ঘোষণা করেছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে কৃষক সংগঠনগুলি ধর্মঘট ডেকেছে। তবে এখানে ধর্মঘট ডাকার পথে না গেলেও ওইদিন চার ঘণ্টা জাতীয় ও রাজ্য সড়ক অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছে সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ সর্বভারতীয় কৃষক সংঘর্ষ সমিতি। এদিন সমিতির রাজ্য শাখার তরফে অমল হালদার, কার্তিক পাল, অভিক সাহা প্রমুখ বামপন্থী নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক বৈঠকে একথা ঘোষণা করেছেন। বাম কৃষক সংগঠনগুলির এই উদ্যোগে প্রদেশ কংগ্রেস পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে অংশ গ্রহণ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অমলবাবুরা বলেছেন, ‘কৃষি বিল হল মোদি সরকারের কৃষক বিরোধী কালা কানুন। তাই বিলের বিরুদ্ধে বাংলার কৃষক সমাজ ওইদিন পথে নামবে। সেই মতো আমরা প্রচার ও প্রস্তুতি নিচ্ছি। বেলা ১২টার পর এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু হবে রাজ্যের বিভিন্ন পয়েন্টে। তাতে রাজ্য অনেকটাই অচল হবে বলে আমরা মনে করি।’ অমলবাবু জানিয়েছেন, তাঁদের এই কর্মসূচিতে বামপন্থী বিভিন্ন দল ছাড়াও কংগ্রেসের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তাদের বিভিন্ন গণসংগঠনও ওই দিন সহমর্মিতা জানাতে কর্মসূচিতে শামিল হবে। মোদি সরকারের একের পর এক পদক্ষেপে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে কৃষকদের। তাঁরা এবার মরিয়া হয়ে আসরে নামতে চলেছেন। রাজ্যের তৃণমূল সরকার যদি পুলিস দিয়ে অবরোধ কর্মসূচি বানচাল করতে চায়, তাহলে তার পরিণাম খারাপ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে যৌথ মঞ্চ।
রাজ্যে গত পাঁচ বছরে একজনও কৃষক আত্মহত্যা করেনি বলে সম্প্রতি সংসদে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। সেই প্রসঙ্গে এদিন বাম নেতৃবৃন্দ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই বাস্তব পরিস্থিতি কখনওই স্বীকার করতে চায় না। তাই তারা কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে দিল্লিতে কোনও তথ্য পাঠায় না। আমরা এর আগে ২১৮ জন আত্মঘাতী কৃষকের নাম-পরিচয় সহ বিস্তারিত তথ্য মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠিয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলাম। কলকাতার বুকে আত্মঘাতী কৃষকদের পরিবারের লোকজন এনে প্রকাশ্য জনসভা করেছি। এখন আত্মঘাতী কৃষকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৩। এবার সেই তথ্য সাংসদ রাজ্যসভার সদস্য বিকাশ ভট্টাচার্য সংসদে তুলে ধরবেন।