সরকারি চাপে হটস্পট সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করল না আইসিএমআর
দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত জরিপে দশটি শহরের হটস্পট সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য মুছে ফেলতে বাধ্য করা হয় আইসিএমআর-কে। সরকারী নির্দেশে আইসিএমআর-এর গবেষণাপত্র থেকে এই তথ্য বাদ দেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর।
আইসিএমআর প্রধান বলরাম ভার্গবের নির্দেশে এই গবেষণাপত্র থেকে ১০ টি শহরের হটস্পট সংক্রান্ত তথ্য সরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থার বেশ কিছু কর্মী। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এর ডিরেক্টর জেলারেল এবং স্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগের সম্পাদক ভার্গব বাবু গবেষকদের বলেছিলেন যে হটস্পট বিষয়ক তথ্য প্রকাশের অনুমোদন কাউন্সিলের নেই।
সূত্র মারফৎ আরও জানা গেছে যে আইসিএমআর প্রধান নিজেই এই পেপারের কো-অথর। তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি যে কে বা কেন এই তথ্য প্রকাশে বাধা দিয়েছে। অন্যান্য কো-অথর-রা জানিয়েছেন যে তাদের হটস্পট বিষয়ক সমস্ত তথ্য বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আইসিএমআর সহ অন্যন্য কয়েকটি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ১১ই মে থেকে ৪ ঠা জুনের মধ্যে ৭০ টি জেলার ৪০০ জন করে এবং ১০টি শহরের হটস্পট থেকে ৫০০ জন করে প্রতিনিধি বেছে তাদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে জরিপটি করা হয়। কিন্তু, বেশি সংক্রমিত অঞ্চলের তথ্য রিপোর্ট থেকে বাদ দেওয়া হয়। আর তার পরিবর্তে কম সংক্রমিত জেলাগুলির তথ্য রিপোর্টে রাখা হয়।
ক্রিশ্চান মেডিকেল কলেজ, ভেলোরের কো-অথর, কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন প্রধান এবং কাউন্সিলের এপিডেমিওলজি এবং নজরদারি কমিটির সদস্য জয়াপ্রকাশ মুলিয়িল এ বিষয়ে বলেন “বিজ্ঞানের সাধনা সত্যের সন্ধান করা – গবেষণা দমন করা অনুচিত” ।
গবেষণা অখন্ডতা এবং প্রকাশনা নীতি সম্পর্কিত কাউন্সিলের ২০১৯ নীতিমালায় পরিস্কার বলা আছে, “ফলাফল নির্বিশেষে সমাপ্ত গবেষণা অবশ্যই ক্লিনিকাল ট্রায়ালস রিসার্চ ইন্ডিয়া, ইনস্টিটিউট ওয়েবসাইট -এর মতো পাবলিক ডেটাবেসে প্রকাশ করতে হবে।”
হটস্পট এলাকার তথ্য বাদ দিতে বৈজ্ঞানিকদের ওপর সরকারের চাপ সৃষ্টি করার এই ঘটনা শুধু যে নজিরবিহীন তাই না, এর থেকে সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবেরও প্রকট ইঙ্গিত পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, এ বছর এপ্রিল মাসে গবেষকরা ৩৬টি জেলায় গোষ্ঠী সংক্রমণের প্রমাণ খুঁজে পেলেও সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সেই তথ্য প্রকাশে বাধা দেন ।