ক্যামেরা নিয়ে কেন এসেছেন? হরিবংশকে কটাক্ষ ধর্ণাস্থলে
আগেই জানিয়েছিলেন, ধরনা-প্রতিবাদ জারি থাকবে। সেইমতো সারারাত সংসদের গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং দোলা সেন-সহ রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড হওয়া আট সাংসদ। বুধবার সকালেও রণে ভঙ্গ দেননি তাঁরা।
জোড়া কৃষি বিল ঘিরে গত রবিবার রাজ্যসভায় তুলকালাম হয়। তার জেরে সোমবার আট সাংসদকে এক সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড করে দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। কিন্তু সভাকক্ষ ছাড়তে অস্বীকার করেন ওই আট সাংসদ। পরে সভাকক্ষ ছাড়লেও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেন ডেরেক, দোলা, আপের সঞ্জয় সিং, কংগ্রেসের রাজু সাতাব, সইদ নাজির হুসেন ও রিপুন বোরা এবং সিপিআইএমের কে কে রাগেশ ও ইলামারান করিম। ‘আমরা কৃষকদের জন্য লড়ব’ ‘গণতন্ত্রের হত্যা’, ‘সংসদের হত্যা’ পোস্টার নিয়ে বিজেপি সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়।
রাতভর ধরনার জন্য রীতিমতো প্রস্তুতি নিয়েও আসেন আট সাংসদ। নিজেদের বালিশ ও চাদরের পাশাপাশি ছিল মশা মারার ওষুধও। তবে কংগ্রেস সাংসদ রিপুন বোরা ও সিপিআইএম সাংসদ ইলামারান করিমের স্বাস্থ্য নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছেন অনেক বিরোধী নেতা। দু’জনেরই বয়স ৬৫-র উপরে। তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা যাতে পড়ে না যায়, সেজন্য বিরোধী সাংসদরা বিভিন্ন খাবারও পাঠাতে থাকেন। পাশাপাশি একটি অ্যাম্বুলেন্সও তৈরি রাখা হয়েছিল।
বিক্ষোভকারী সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, জেডিএস প্রধান তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া, সমাজবাদী পার্টির জয়া বচ্চন, কংগ্রেসের আহমেদ প্যাটেল, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে। আট সাংসদের সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টায় ধরনায় বসেছিলেন কংগ্রেস দিগ্বিজয় সিং। মধ্যরাত পেরিয়ে লোকসভার অধিবেশন শেষের পর বিক্ষোভকারী সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেন শশী থারুর। কাকতালীয়ভাবে কংগ্রেসের রাজু সাতাব আবার গান্ধীমূর্তির পাদদেশেই জন্মদিনের রাত কাটান।
তারইমধ্যে বুধবার সকালে আট সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং। যাঁর সিদ্ধান্ত নিয়েই রবিবার সংসদের উচ্চকক্ষে তুলকালাম বেঁধেছিল। আট সাংসদের জন্য চা নিয়ে আসেন তিনি। অবশ্য, তাঁকে কটাক্ষ করেন ধর্নারত সাংসদরা। তাদের বক্তব্য, হরিবংশ ক্যামেরা নিয়ে এসেছেন কেন চা খাওয়াতে।
এই চা চক্র যে রাজনৈতিক হাতিয়ার, তা স্পষ্ট হয়ে যায় কিছুক্ষন পরেই, প্রধানমন্ত্রীর টুইটে। তিনি লেখেন, “যারা ডেপুটি চেয়ারম্যানকে আক্রমণ করেছিল, তাদের জন্য চা নিয়ে গিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন হরিবংশ জি। তাকে অভিনন্দন জানাই।” এতে স্পষ্ট, বিহার ভোটের আগে চায়ের অস্ত্র ব্যবহার করে মানুষের মন জিততে চাইছেন মোদী।