পুজোর আগেই বাড়তে চলেছে মেট্রোর সংখ্যা
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর আগেই পাতালপথে ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে চলেছে মেট্রো রেল। একইসঙ্গে যাত্রী সংখ্যায় নিয়ন্ত্রণও কিছুটা শিথিল করতে চলেছে তারা। করোনা পর্বে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এ মাসের ১৪ তারিখ থেকে জনসাধারণের জন্য দরজা খোলা হয়েছে মেট্রোর। তবে সীমিত যাত্রী নিয়েই তা ছুটছে নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষ। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এখন দিনে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার যাত্রী সফর করছেন এই পথে। পুজোর আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রাকে বাড়িয়ে এক লক্ষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাদের এই পরিকল্পনা সফল হলে দিনে আরও ৫৫ হাজার যাত্রী মেট্রো সফরের সুযোগ পাবেন।
ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা প্রতিদিন ই-পাস এবং যাত্রী সংখ্যার উপর নজর রাখছি। প্রাক-করোনা পর্বে দৈনিক গড়ে সাড়ে ছ’ লাখ যাত্রী মেট্রোয় চড়তেন। বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে। তবে আমাদের লক্ষ্য, দিনে এক লাখ যাত্রীকে পরিষেবা দেওয়া।
এদিকে, আগামী সোমবার থেকে শেষ মেট্রো ছাড়ার সময়ে বদল আনা হচ্ছে। কবি সুভাষ ও নোয়াপাড়া স্টেশন থেকে এখন শেষ ট্রেন ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টায়। অফিস টাইমে অতিরিক্ত যাত্রীর কথা মাথায় রেখেই কর্তৃপক্ষ শেষ ট্রেন ছাড়ার সময় সাড়ে ৭টা করতে চলেছে। অর্থাৎ ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে দু’প্রান্ত থেকেই শেষ মেট্রো সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ছেড়ে যাত্রা শেষ করবে সাড়ে আটটায়। তবে পরিষেবা শুরুর সময় অপরিবর্তিত থাকছে বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। পরিষেবার সময় আধঘণ্টা বৃদ্ধি পাওয়ায় ছ’টি অতিরিক্ত ট্রেন চালাতে হবে। সব মিলিয়ে এখন যেখানে দিনে ১১০টি ট্রেন চলে, তার বদলে চলবে ১১৬টি।
আগামী ২২ অক্টোবর দুর্গাষষ্ঠী। অন্যান্য বছর ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত রাতভর মেট্রো পরিষেবা পাওয়া যেত। এবার করোনার জেরে সেই সুবিধা আর পাওয়া যাবে না। তবে শেষ মেট্রোর সময় রাত ১১টা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজোর জৌলুস কমতে দিতে নারাজ। তাই আমরা পুজোর সময় পরিষেবা বাড়াতে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব।
মেট্রো রেল সূত্রের খবর, করোনা আবহে প্রতিটি ট্রেনে সর্বাধিক ৪০০ যাত্রী তোলা হচ্ছে। তাই দু’টি ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কমিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও সামাল দেওয়া যাবে। তবে করোনা আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষকে। তাদের আশঙ্কা, পরিষেবা দিতে গিয়ে কোনও কর্মী সংক্রামিত হয়ে পড়লে তখন সমস্যা হবে। তাঁর সংস্পর্শে আসা কর্মীদের তখন কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হবে। তাই সতর্ক হয়েই পা ফেলতে চাইছেন মেট্রো কর্তারা। পাশাপাশি কর্মীদের একটা বড় অংশ আসে শহরতলি থেকে। লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় তাঁদের যাতায়াত করতে সমস্যা হচ্ছে। সব মিলিয়ে পরিষেবা বৃদ্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয়গুলির সমাধান সূত্র খুঁজতে দফায় দফায় বৈঠক করছেন মেট্রো কর্তারা।