মাত্র ৫ টাকায় ভরপেট খাওয়াতে ব্যারাকপুরে চালু ‘দিদির রান্নাঘর’
লকডাউনের স্তব্ধ সময় কাজ হারানো ক্ষুধার্তদের মুখে সামান্য অন্ন তুলে দিতে শহর কলকাতায় শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালু করেছিলেন বামপন্থী কর্মী, সমর্থকরা। যাদবপুর থেকে সেই কিচেনের পথ পরিক্রমা হয়ে গিয়েছে গোটা বাংলা জুড়ে।
এ ব্যাপারে রাজ্যের শাসকদল কিছুটা পিছিয়ে থেকে উদ্যোগী হলেও, তাদের কমিউনিটি কিচেন (Community Kitchen) থেকেও কিন্তু কম উপকৃত হচ্ছেন না সমাজের অনেকটা নিচুস্তরে থাকা মানুষজন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় হাওড়ার পর এবার বারাকপুরে (Barrackpore) এক স্পোর্টিং ক্লাব ও তৃণমূলের যৌথ উদ্যোগে চালু হচ্ছে স্বল্পমূল্যে একবেলা পেটভরে খাবারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। নাম তার – ‘দিদির রান্নাঘর’। আগামী একমাস এখানে মাত্র ৫ টাকাতেই মিলবে মধ্যাহ্নভোজ। বারাকপুরবাসীর কথায়, এ তো পুজোর উপহার!
মাস খানেক আগে হাওড়া তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলরের উদ্যোগে সেখানকার দুই জায়গায় চালু হয়েছে দুটি কমিউনিটি কিচেন। সালকিয়া এলাকায় চলছে ‘মমতার মমতা’, আর বেলগাছিয়া এলাকার রান্নাঘরের নাম ‘মমতাময়ী মমতা’। দুটিতেই ১০ থেকে ২০ টাকা অর্থাৎ অতি স্বল্পমূল্যে মিলছে ভরপেট খাবার। মাছভাত কিংবা ডিমভাত – পেট ভরে খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন সকলেই। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে এই কিচেনে চলে গেলে কাউকেই না খেয়ে ফিরতে হবে না। তবে বারাকপুরে তৈরি ‘দিদির রান্নাঘর’ একটু ভিন্ন। পয়লা অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর অর্থাৎ গোটা পুজোর মাসটিতেই এলাকার স্থানীয় দরিদ্র মানুষজনের অন্নের ভাবনা মুছে দিতে চালু করা হচ্ছে এই কমিউনিটি কিচেন। এখানে মাত্র ৫ টাকাতেই মিলবে ভরপেট মধ্যাহ্নভোজ। বারাকপুরের বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালের ঠিক উলটোদিকেই ‘দিদির রান্নাঘর’। বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত খোলা, সকলের প্রবেশ অবাধ। জানালেন উদ্যোক্তারা।
বারাকপুর ও টিটাগড় ক্লাব সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে চালু হওয়া ‘দিদির রান্নাঘর’এ শামিল দুই পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের মুখ্য প্রশাসকরাও। এছাড়া এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এই এলাকার অতি পরিচিত সমাজসেবী লালন পাসোয়ান। সকলেই আগামী ১ তারিখ অর্থাৎ ‘দিদির রান্নাঘর’ যেদিন প্রথম জনপরিষেবা প্রদান শুরু করবে, সেদিন ওখানে উপস্থিত থাকবেন। মাত্র ৫ টাকাতেই সকলের মুখে তুলে দেবেন দুপুরের খাবার। পুজোর মাসটায় টানা মধ্যাহ্নভোজ সরবরাহের পর পরিস্থিতি, প্রয়োজন বুঝে ‘দিদির রান্নাঘর’-এর পরিষেবার সময়সীমান বাড়ানো হতে পারে। তবে আপাতত উদ্যোক্তাদের মূল লক্ষ্য, করোনা আবহে উৎসবের মাঝে কাউকে যেন একটু খাদ্য সংস্থানের জন্য চিন্তা করতে না হয়। স্বাগত জানাচ্ছে বিটি রোডের উপর ‘দিদির রান্নাঘর’।