দোকানের জায়গা দখলের প্রতিবাদ করায় মহিলাকে মারধর বিজেপির
তাঁর দোকানের সামনেই জবরদখল করে পার্টি অফিস খোলে কয়েকজন বিজেপি-কর্মী। প্রতিবাদ করায় হেনস্তা হতে হল এক মহিলা দোকানদারকে। শুক্রবার চুঁচুড়ার পিপুলপাতিতে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। ওই মহিলা দোকানদার তাঁর দোকান খুলতে গেলে বাধা দেয় বিজেপি কর্মীরা। দু’তরফের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। দোকানদার মিনতি দত্তের অভিযোগ, তাঁকে বিজেপি কর্মীরা মারধর করেছে। পুলিস গিয়ে বিজেপি নেতৃত্বকে ওই অফিস সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মিনতিদেবী চুঁচুড়া থানায় জবরদখল, মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন। দীর্ঘ প্রায় দু’বছর ধরে পিপুলপাতিতে বিজেপির ওই অফিস চলছিল। এ দিনের ঘটনার পর বিজেপির দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়ায়নি দলের মণ্ডল নেতৃত্ব। তাঁরা ওই অফিসের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন। ঘটনার পরপরই জবরদখল নিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে চুঁচুড়া পুরসভাও।
পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা পুরসভার জায়গা দখল করা নিয়ে নোটিস দিয়েছিলাম। কিন্তু বারবার সেই নোটিস বিজেপি অগ্রাহ্য করেছে। তারপরে শুনলাম এক অসহায় মহিলা দোকানদারকে তাঁর দোকান খুলতে দিচ্ছে না। ওই মহিলা এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন। আমরাও থানায় অভিযোগ করব।’ মিনতি বলেন, ‘আমরা দোকানটা ৯৯ বছরের জন্য ভাড়ায় নিয়েছি। মাঝে কিছুদিন দোকান চালাতে না-পেরে বন্ধ রেখেছিলাম। সেই সুযোগে আমার দোকানের সামনের জায়গা দখল করে বিজেপির অফিস তৈরি হয়। বিজেপি নেতা নিমাই দত্ত ওই অফিস খোলে। কিছুদিন আগে আমি দোকান খুলব বলে জবরদখল সরাতে বলি। কিন্তু বিজেপি তা সরায়নি। আমি দোকান খুলতে এলে ওরা আমাকে মারধর করে।’ অভিযুক্ত নিমাই দত্ত বিজেপির চুঁচুড়া মণ্ডলের প্রাক্তন সভাপতি। তিনি বলেন, ‘মিনতিদেবীকে কোনও মারধর করা হয়নি। তৃণমূলের উস্কানিতে উনি মিথ্যে অভিযোগ করছেন। আমরা দোকান মালিকের লিখিত অনুমোদন নিয়ে অফিস করেছিলাম।’
বিজেপির চুঁচুড়া মণ্ডলের বর্তমান সভাপতি বাপন হাজরা বলেন, ‘ওখানে একটি জনসেবা কেন্দ্র চালানো হতো, কোনও অফিস নয়। বিজেপির কোনও জনসেবা কেন্দ্র নেই। কোনও অন্যায়ের প্রতি দলের সমর্থন নেই।’ চুঁচুড়া থানার পুলিস জানিয়েছে, এলাকা দখলমুক্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিনতিদেবীর অভিযোগের পৃথক তদন্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দোকান মালিকের সঙ্গে ভাড়াটে অর্থাৎ মিনতিদেবীদের কিছু সমস্যা চলছিল। সেই সুযোগে বিজেপি কর্মীরা ওই দোকানের সামনে অফিস করে বসে। প্রথমে বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী অফিস করা হয়। পরে ধীরে ধীরে লোহার কাঠামো করা হয়েছিল। মিনতিদেবী দোকান খুলতে যেতেই উত্তেজনা ছড়ায়।