বিশ্বভারতীর মেলার মাঠে পাঁচিল নিয়ে হাই কোর্টের কমিটির বৈঠক অধরা, মীমাংসা হল না আজও
জট যেন কিছুতেই কাটছে না বিশ্বভারতী (Vishva Bharati) বিশ্ববিদ্যালয়ে। মেলার মাঠে পাঁচিল তৈরি নিয়ে সমস্যা মেটাতে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC) একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করে দিয়েছে। কমিটির সদস্যরা আজ শান্তিনিকেতন গিয়ে সবপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠকে বসলেও, তা কার্যত নিষ্ফলা। ব্যবসায়ী, ছাত্র এবং আশ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, কমিটি আগে থেকে ঠিক করে রখেছে যে মেলার মাঠ ঘিরে দেবে। তাই এই বৈঠকের কোনও অর্থ হয় না। সমাধানের পথে হাঁটতে গিয়ে নিরপেক্ষহীনতার অভিযোগে বৈঠক বয়কট করল ব্যবসায়ী সমিতি।
মেলার মাঠ কি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হবে নাকি ফেন্সিং বসানো হবে? এই প্রশ্নের মীমাংসা হল না আজও। শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিসে বৈঠকে বসেন কলকাতা হাই কোর্ট গঠিত কমিটির ৪ সদস্য। সঙ্গে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা, এসপি শ্যাম সিং, ব্যবসায়ী সমিতি, আশ্রমিক, পড়ুয়া, স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিনিধিরা। ১২.৪০ পর্যন্ত আলোচনা কার্যত নিষ্ফলা। বৈঠক থেকে বেরিয়ে অধিকাংশেরই বক্তব্য, কমিটির কথায় মনে হয়েছে যে তাঁরা মেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়েই নিয়েছেন। তাই আলোচনা অর্থহীন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে এই অভিযোগই তুললেন আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের সিংহভাগ। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিং, স্থানীয় বাসিন্দা শৈলেন মিশ্র এবং পডুয়াদের একই বক্তব্য। স্থানীয় বাসিন্দা শৈলেন মিশ্রর অভিযোগ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তিদেব ঘোষের মতো ব্যক্তিত্বদের বাড়ির সামনে পাঁচিল উঠছে। এটা বিশ্বভারতী বা শান্তিনিকেতনের পরিবেশ নয়। অবশ্য বৈঠক নিয়ে ভিন্নমত জানালেন আশ্রমিক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ”আমি আশ্রমিকদের প্রতিনিধি হয়ে বৈঠকে অংশ নিয়েছিলাম। ওঁরা যথেষ্ট ভাল ব্যবহার করেছেন, আমার সব কথা শুনেছেন। মেলার মাঠে পাঁচিল তোলার পক্ষে নই আমরা, টেম্পোরারি ফেন্সিং দেওয়া যেতে পারে। তবে ওঁরা জানালেন যে এই বিষয়টি নিয়ে গ্রিন ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এখনই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি আসেনি।”
শান্তিনিকেতনে ঐতিহ্য মেনে ২ ফুট পাঁচিল আর ফেন্সিং দিয়ে মেলার মাঠ ঘেরার পক্ষেই অধিকাংশ মানুষজন। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মাঠটি পুরো পাঁচিল দিয়ে ঘেরার পক্ষে। এই নিয়ে দ্বন্দ্ব, বিবাদ তৈরি হয়েছে। এর সমাধানেই কলকাতা হাই কোর্ট ৪ জন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল, যাঁরা সবপক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু শনিবার অন্তত সেই চেষ্টা ব্যর্থই হল বলা চলে।