উত্তম পরবর্তী যুগের অসামান্য অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক
উত্তম কুমার পরবর্তী যুগে বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রভাবশালী নায়ক রঞ্জিত মল্লিক। বঙ্গবিভূষণ প্রাপ্ত এই বর্ষীয়ান অভিনেতা সেই সাদা কালো যুগ থেকে এখনও অবধি বহু বাংলা ছবিতে সমান পারদর্শীতার সাথে অভিনয় করে আসছেন।
২৮শে সেপ্টেম্বর ভবানীপুরের বনেদী মল্লিকবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এই অভিনেতা। তাঁর পিতামহ বাঙালী বিজ্ঞানী ইন্দুমাধব মল্লিক এবং পিতা শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রচন্দ্র মল্লিক। কলকাতার মল্লিকবাড়ি তাদের দুর্গাপুজার জন্যে বিখ্যাত হয়ে আছে বহুকাল ধরে। রঞ্জিত মল্লিকের ডাকনাম ছিল রঞ্জু। প্রথমে আশুতোষ কলেজ এবং পরে শ্যামাপ্রসাদ কলেজে তিনি পড়াশোনা করেন।
১৯৭১ সালে মৃণাল সেনের ইন্টারভিউ ছবি থেকে তার অভিনয় জীবনের যাত্রা শুরু। প্রথম ছবিতেই তিনি আন্তর্জাতিক সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান। এরপর তিনি ক্রমশ বানিজ্যিক ঘরানার ছবিতে নিজের প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। উত্তম কুমারের সাথে সহ নায়কের ভূমিকায় তিনি মৌচাক ছবিতে যথেষ্ট জনপ্রিয় হন। ধীরে ধীরে দেবী চৌধুরানী, স্বয়ংসিদ্ধা ইত্যাদি ছবিতে তার অভিনয় সকলের প্রশংসা পায়।
সত্যজিত রায় তার শাখা প্রশাখা ছবিতে মূখ্য চরিত্রে নির্বাচন করেন। ১৯৭০ সালে প্রধানত নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করলেও, ১৯৮০-র মাঝভাগ থেকে তিনি ক্রমশ বড় ভাই, মামা বা সমাজের আদর্শ পুরুষ ইত্যাদি চরিত্র যা কিনা সরাসরি নায়কও নয় আবার নায়কের থেকে কমও নয় – এইরকম চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। গুরুদক্ষিণা, ছোটবউ, সংঘর্ষ ইত্যাদি ছবি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
উত্তম পরবর্তী সময়ে যখন বাংলা ছবির দর্শক সিনেমা হল থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন সেই সময় পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর সাথে জুটি বেঁধে তিনি শত্রু সিনেমায় এক সৎ নির্ভিক পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই ছবি বাংলা ছবিতে একটি মাইলস্টোন হয়ে আছে।