জীবনশৈলী বিভাগে ফিরে যান

‘স্পেস’ দিন সন্তানকে 

September 28, 2020 | 2 min read

সাধারণ অবস্থায় মা-বাবা কাজেকর্মে ব্যস্ত থাকেন। সন্তান যায় স্কুলে, খেলার মাঠে, কোচিং ক্লাসে। দেখা সাক্ষাৎ হয় কম। যতটুকু হয়, আদরে-বকুনিতে কেটে যায়। কিন্ত তা-ও চাকুরিরতা মায়ের মনে হয়, ঠিকঠাক সময় দেওয়া হল না বুঝি। ফলে এই সময় তা সুদে-আসলে উশুল করার চেষ্টা করছেন অনেকে। আর তাতে হচ্ছে হিতে বিপরীত।

অখুশি সন্তান একে তো বাবা-মায়ের চোখের সামনে দিনরাত, তার উপর অনলাইন ক্লাস ও টাস্কের চাপ। সেখানেও বাবা-মায়ের নজরদারি। একটু নিজের মতো করে সময় কাটানোর কোনও সুযোগ নেই। তার উপর আগে যতটুকু ভাল-মন্দ খাওয়া হত, সে রেস্তরাঁয় হোক কি বন্ধুদের টিফিনের ভাগ থেকে, এখন সে সবও বন্ধ। চার বেলা ঘরে বানানো স্বাস্থ্যকর খাবার। এত দিন এত স্বাধীনতার পর হঠাৎ কি এসব সহ্য হয়! ফলে কথায় কথায় বিদ্রোহ করছে সন্তান।

সমাধান “সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করুন”, বলছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথা, “আপনি ভাবছেন, আপনি দুশ্চিন্তায় আছেন আর সন্তান আছে দিব্যি। ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। সে-ও নানান উদ্বেগে আছে। কবে স্কুল খুলবে, কবে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা হবে, কবে বন্দিদশা ঘুচবে ইত্যাদি। কাজেই ঘরে যেন সে আনন্দ পায় অথচ বেশি দুষ্টুমিও না করে সে দিকে খেয়াল রাখুন। একটু স্পেস দিলেই দেখবেন, সব নিজে থেকেই ঠিক হয়ে গিয়েছে। কী ভাবে কী করলে সব দিক বজায় থাকবে, দেখে নিন।”

সন্তানের সঙ্গে আলোচনা করে মোটামুটি একটা রুটিন ঠিক করে নিন। সে কতক্ষণ পড়বে, কতক্ষণ টিভি দেখবে, কতক্ষণ গেম খেলবে আর কতক্ষণই বা আপনার কাজে সাহায্য করবে। একই ভাবে, ঘুমতে যাওয়া, সকালে ওঠা, হালকা ব্যায়াম ও কোনও হবির চর্চা কখন কতক্ষণ ধরে করবে, তার রূপরেখা ঠিক করে নিন। 

রুটিনের একটা কপি তার কাছে থাক, একটা আপনি রাখুন। খেয়াল রাখুন, সে রুটিন কতটা মানছে। অনিয়ম করলে দিনের শেষে মনে করান। এতে অশান্তি কমবে, সে নিজের দায়িত্ব নিতে শিখবে। শিখবে নিয়মানুবর্তিতা। সব সময় পিছনে লেগে থাকলে যা হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। রুটিন মানতে ঢিলেমি করলে ধৈর্য ধরুন। সব সময় বকাঝকা না করে দিনের শেষে এক বার মনে করিয়ে দিন। একটা সময় ধাতে চলে আসবে।

যে দিন নিয়ম মানবে বা অনিয়ম কম করবে, সেদিন ওর পছন্দের কোনও খাবার বানিয়ে খাওয়াতে পারেন বা পছন্দের কোনও গেমের সুযোগ দিতে পারেন। এটা যে তার নিয়ম মানার পুরস্কার, তা ভাল করে বুঝিয়ে দেবেন। অর্থাৎ সে যেন বোঝে, নিয়ম মানলে পুরস্কার ও না মানলে তিরস্কার পাওয়াটাই নিয়ম।

তার কোনও বিশেষ দাবি-দাওয়া থাকলে, আগেই তা নস্যাৎ করে না দিয়ে মন দিয়ে শুনুন, সে কী বলতে চায়। ভেবে দেখুন, তাতে কোনও ক্ষতি হবে কি না। না হলে ১০টার মধ্যে ৫-৭টা অন্তত মেনে নিন। তাহলে যেগুলি মানলেন না, তা নিয়ে আর তার অভিযোগ থাকবে না। অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না। এতে লাভ তো হয়ই না, বরং অশান্তি বাড়ে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Child Health

আরো দেখুন