বসছে পুজোর বাজার, ট্রেনের অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা
ধীরে হলেও জমছে পুজোর বাজার। অন্তত রবিবারের বাজারে তেমনই ইঙ্গিত। চার দেওয়ালের গণ্ডি ছেড়ে কিছুটা বেপরোয়া হয়েই মানুষ পা বাড়াচ্ছে পুজোর বাজারের দিকে।
পুজো আসতে আর মাত্র ২৪ দিন। অন্যান্য বছরে এই সময়ে বাজারে গিজগিজে ভিড় থাকে। তা সে উত্তরের হাতিবাগান হোক অথবা দক্ষিণের গড়িয়াহাট কিংবা শহরের প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেট। তবে এ বছর কোভিড স্পেশাল। শহরবাসীর আতঙ্ক আগের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে। সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে আপাতত পুজোর বাজারের পথে পা বাড়িয়েছে আবেগপ্রবণ বাঙালি। ধীরে ধীরে পুজোর শপিং জমছে শহরে। রবিবারের গড়িয়াহাট, নিউমার্কেট কিংবা হাতিবাগান চত্বর ঘুরে অন্তত সেই ছবি দেখা গিয়েছে।
রবিবার দুপুর থেকে গড়িয়াহাট চত্বরে ধীরে ধীরে জনসমাগম বাড়তে থাকে। অনেকেই জামা কাপড়ের সঙ্গে ম্যাচিং করে গয়নাগাটি কিনছেন। আবার অনেকে মনোযোগ দিয়েছেন শাড়িতেই। কোভিড পরিস্থিতি অনুযায়ী আগের তুলনায় বিক্রির হাল কিছুটা হলেও ফিরেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গড়িয়াহাটের ফুটপাতের শাড়ি বিক্রেতা সমীর রায়ের মন্তব্য, শুক্র থেকে রবিবার পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আসছেন। তবে সংখ্যাটা এখনও পর্যন্ত ব্যবসার হাল ফেরানোর পক্ষে উপযুক্ত নয়। ব্যবসায়ী মহলের দাবি, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না-হলে কোনওমতেই পুরনো মেজাজে ফিরবে না গড়িয়াহাট। কারণ পুজোর সময় বেশিরভাগ ক্রেতাই আসেন শহরের বাইরে থেকে। মূলত, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে মানুষ গড়িয়াহাটে এসে কেনাকাটা করেন। তবে ট্রেন বন্ধ থাকার কারণে তাঁরা আসতে পারছেন না। পুজোর তিন সপ্তাহ আগে গড়িয়াহাট এখনও পুরোদমে সচল হয়নি বললেই চলে।
অপরদিকে, হাতিবাগান চত্বরে শনি, রবিবারে উত্তর কলকাতা এবং শহরতলির বহু মানুষকে দুই হাত ভর্তি ব্যাগ নিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গিয়েছে। পড়ন্ত বিকেলে বহু ক্রেতা ঝালমুড়ির ঠোঙা হাতে বেরিয়েছেন হাতিবাগানের ফুটপাতে। ভিড় পর্যাপ্ত না-হলেও শহর কলকাতা ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছ। হাতিবাগানের ছবি থেকে সেটা স্পষ্ট। ডানলপ থেকে হাতিবাগানে আসা সুরভি ঠাকুর বলেন, কোভিডের আতঙ্ক ভুলে পুজোর আবেগে মেতে ওঠাই এখন অন্যতম লক্ষ্য। ওয়ার্ক ফ্রম হোম, লকডাউন তো অনেক হল। এ বার জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পুজোর কেনাকাটা ‘মাস্ট’।
উল্লেখযোগ্যভাবে উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার এই দুই মার্কেট ছাড়া নিউ মার্কেট চত্বরে ছবিটা ছিল কিছুটা ভিন্ন। সেখানকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত শুক্র এবং শনিবার নিউ মার্কেট চত্বরে বেশ ভিড় ছিল। রবিবার তুলনামূলকভাবে অনেকটাই হালকা হয়ে গিয়েছে। তবে সমস্ত জায়গার ব্যবসায়ীদের একটাই কথা, ট্রেন পরিষেবা চালু হোক অতি শীঘ্রই।