করোনার বড় ধাক্কা, বন্ধ থাকছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির
করোনা সংক্রমণের থেকে খানিক সামলে উঠেছিল ওডিশা। কিন্তু ফের বড় ধাক্কার সম্মুখীন নবীন পট্টনায়কের রাজ্য। জানা গিয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রায় ৪০০ জন সেবায়েত এবং আধিকারিক করোনা আক্রান্ত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওডিশা সরকার হাই কোর্টকে জানিয়ে দিয়েছে এখনই রাজ্যের ধর্মস্থান খোলার কথা ভাবা হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, মার্চ মাস থেকেই ভক্তদের জন্যে বন্ধ করা হয়েছিল বিভিন্ন ধর্মস্থান।
ওডিশা হাইকোর্টে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে সরকারের তরফে জানানো হয়, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে যথেষ্ঠ জাগয়া নেই। ফলে এখনই মন্দিরের দরজা ভক্তদের জন্যে খুলে দেওয়া হলে বেড়ে যাবে করোনা সংক্রমণ। আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় রাজ্য সরকার এও জানিয়েছে জগন্নাথ মন্দিরের মোট ৩৫১ জন সেবায়েত এবং ৫৩ জন আধিকারিক সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এখানেই শেষ নয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও হয়েছে বহু সেবায়েতের। তার মধ্যে রয়েছেন মন্দির ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য প্রেমানন্দ দাশমহাপাত্রও।
প্রতিদিন একাধিক সেবায়েত করোনা আক্রান্ত হওয়ায়, জগন্নাথের নিত্য পুজোর জন্যেও সেবায়েত পাওয়া যাচ্ছে না। মন্দিরের এক সেবায়েত জানিয়েছেন, ‘একাধিক সুয়ার, মহাসুয়ার, দ্বৈতাপতি এবং পুজো পান্ডা করোনা আক্রান্ত। যদিও মন্দিরের সব নিয়ম আচার মেনে চলা হচ্ছে, কিন্তু এখনই যদি মন্দির খোলার অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে।’ উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র পুরী জেলাতেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯,৭০৪ জন।
জগন্নাথ মন্দিরের ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা জানিয়েছেন সেবায়েতদের জন্যে মজুত রাখা হবে ভেন্টিলেটর সহ অ্যাম্বুলেন্স। এছাড়াও আক্রান্তদের উপর নজরদারির জন্যে তৈরি রাখা হচ্ছে দুটি দল। আক্রান্তরা সঠিকভাবে আইসোলেশনের নিয়ম মেনে চলছেন কি না তা খতিয়ে দেখবে এই দুই দল। মন্দিরের আসপাশে আসতে হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি যে অবস্থায় রয়েছে তাতে নভেম্বর মাসে জগন্নাথের নাগার্জুন বেশ-এর অনুষ্ঠান নাও হতে পারে। উল্লেখ্য, ২৬ বছর পর, এবছরই জগন্নাথের নাগার্জুন বেশ পরিবর্তন হওয়ার কথা ছিল।
এর আগেও অবশ্য অগস্ট মাসের শুরুতে পুরীর শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (SJTA) তরফে জানানো হয়েছিল জগন্নাথ-বলভদ্র-সুভদ্রার দর্শনের জন্যে ভক্তদের থেকে কোনও কোনও রকম অনলাইন বুকিং গ্রহণের পরিকল্পনা নেই মন্দির কর্তৃপক্ষের।