রাত আড়াইটায় ধর্ষিতার দেহ পুড়িয়ে দিল ইউপি পুলিশ
মঙ্গলবার থেকেই শিরোনামে উত্তরপ্রদেশের হাথরস। গণধর্ষণের পর নির্যাতিতার কঠিন লড়াই। জীবন যুদ্ধে হার মঙ্গলবার।
একদিকে যখন ধর্ষকদের গ্রেফতার করার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। রাজনীতির রঙ নির্বিশেষে সরব হয়েছেন প্রত্যেকে। তারই মধ্যে এক চমকে দেওয়ার মত ঘটনা। মধ্যরাতে মেয়ের দেহ ঘিরে তখন বসে আছে শোকস্তব্ধ পরিবার।
আচমকা পুলিশ এসে নিয়ে গেল সেই মেয়ের মৃতদেহ। আত্মীয়রা গাড়ি আটকালেও কোনও লাভ হল না।
টানা ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন নির্যাতিতা। মঙ্গলবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় দলিত পরিবারের ওই তরুণীর। পরে হাসপাতাল থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে। পুলিশের সঙ্গে মেয়েটির পরিবারের বচসাচলে। রাত ১০টা ১০ মিনিটে হাসপাতাল থেকে দেহটি ছেড়ে দেওয়া হলে, তাঁদের কিছু না জানিয়েই পুলিশ দেহটি নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ করেন মেয়েটির বাবা ও দাদা। হাসপাতালের বাইরে ধর্নায়ও বসেন তাঁরা। পরে সেখান থেকে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে হাথরসের উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ।
দেহটি হাথরসে বাইরে পৌঁছতে নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন, আত্মীয়রা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত মেয়েকে দাহ করবেন না বলে জানিয়ে দেন তাঁরা। কিন্তু এরই মাঝে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে পুলিশ। রাতেই দাহ করতে হবে বলে চাপ সৃষ্টি করে নির্যাতিতার পরিবারের উপর। নির্যাতিতার বাবা ও দাদার অভিযোগ, তাঁদের আপত্তি সত্বেও পুলিশ দেহ তুলে নিয়ে যায় ও পুড়িয়ে দেয়।
পুলিশকে পরিবারের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, হিন্দু রীতি মেনেই মেয়েকে দাহ করবেন, তবে রাতে নয়। এর পরেই পুলিশ তাঁদের উপর জোর খাটাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, নির্যাতিতার পরিবারকে এক পুলিশকর্মী বলছেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে রীতি-নীতি বদলায়। তবে আপনারাও ভুল করেছেন। সেটা মেনে নিন।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, এর পরই নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন, আত্মীয়-স্বজন এবং গ্রামবাসীদের তালাবন্ধ করে রেখে, দেহটি নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশে বেরিয়ে পডে় পুলিশ। মেয়েটির বাবাকেও গাড়িতে তুলে নেয়। রাত আড়াইটা নাগাদ নির্যাতিতার সৎকার করে ফেলে তারা। সৎকারের সময় শ্মশানের আলো নিভিয়ে রাখা হয়েছিল বলেও অভিযোগ।