জলপাইগুড়িতে ভাড়া দেওয়া হল সিপিএম পার্টি অফিস
সেই সোনালি দিন আর নেই। রাজাও নেই রাজত্বও নেই। কিন্তু টিকে থাকার লড়াই আছে। বেঁচে থাকার তাগিদ আছে। আসলে কার্ল মার্কসের তত্ত্ব অনুযায়ী, বিপ্লব হল ইতিহাসের ইঞ্জিন। সুতরাং ইতিহাসের এই ইঞ্জিনকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে বিকল্প পথ তো খুঁজতেই হবে। আজ এই কথাগুলি উঠছে, কারণ এই বিকল্প পথ খুঁজে নিয়েছে ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকা দল সিপিএম।
কী করেছে তারা? গ্রেগর জোহান ম্যান্ডেলের তত্ত্ব অনুযায়ী, তারা অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম করছে। তাই সিপিএম পার্টি অফিস রাতারাতি হয়ে গেল ভাড়া বাড়ি। কারণ এখন আর পার্টি অফিসে কমরেডরা বসে না। মানুষ আসে না। কিন্তু দলটা আছে। তাই পার্টি অফিস রক্ষণাবেক্ষণ করতে টাকার প্রয়োজন। দেবে কে? তাই ভাড়া দেওয়া হল। এতে দুটি উদ্দেশ্যপূরণ হবে। এক, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এখন থেকে ভাড়াটেদের। দুই, এই ভাড়া দিয়ে আয় হবে।
কোথায় ঘটেছে এই ঘটনা? ডুয়ার্সের গয়েরকাটায় সিপিএমের শাখা অফিসটি মালদহ থেকে আসা কয়েকজন ফেরিওয়ালাকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। মাসিক ২ হাজার টাকার বিনিময়ে পার্টি অফিস ভাড়া দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এই ঘটনা জানাজানি হতেই প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম নেতৃত্ব। মূলত চা বাগান অধ্যুষিত ডুয়ার্সের এই এলাকায় সিপিএমের প্রভাব ছিল একদা। চা বাগান বেশি থাকার কারণে শ্রমিক ইউনিয়নের দাপটে একসময় গমগম করত এই অফিস।
২০১১ সালে ক্ষমত্যচ্যুত হওয়ার পরেও ২৭ আসনবিশিষ্ট ধূপগুড়ি ব্লকের সাকোয়াঝোড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত বামেদের দখলে ছিল। ২০১৪ সাল পর্যন্ত লালঝাণ্ডা উড়ত। কিন্তু ২০১৪ সালে সিপিএম ছেড়ে কিছু সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সাকোয়াঝোড়া ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে চলে যায়। এই পরিস্থিতিতে আচমকাই কিছু ফেরিওয়ালাকে ওই শাখা অফিসে প্রচুর পরিমানে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র নিয়ে আসতে দেখা যায়। খবর নিয়ে জানা যায়, তাঁদের ভাড়া দেওয়া হয়েছে পার্টি অফিসটি।
মহম্মদ রাকিবুল নামের এক ফেরিওয়ালা জানান, তাঁরা এই পার্টি অফিস মাসিক ২ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়া নিয়েছেন। তাঁরা জানান, বিক্রির জন্য আনা জিনিসপত্র ফুরিয়ে গেলে ঘর ছেড়ে দেবেন। যদিও সিপিএমের পক্ষ থেকে এমন খবর জানা নেই বলে জানানো হয়েছে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানানো হয়েছে।