পাগড়ি ইস্যুতে বিজেপিকে তোপ নবান্নের
বৃহস্পতিবার বিজেপি (BJP) যুব মোর্চার নবান্ন অভিযানে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির মধ্যে একটি বিষয় বিশেষভাবে উঠে এসেছিল। মিছিলে বলবিন্দর সিং নামে এক বিজেপি কর্মীর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা। তবে আগ্নেয়াস্ত্র নিছকই সুরক্ষা বিঘ্নিত করার মতো উদ্বেগের স্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তাতে জাতি বৈষম্যের রংও লেগেছিল। ওই বিজেপি কর্মী শিখ হওয়ায় তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছিল নানা চাপানউতোর। শিখ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার এবং তাঁর কাছ থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন অনেকেই। তাঁকে নিয়ে চারপাশে নানারকম আপত্তিজনক মন্তব্য শুরু হওয়ায় তার প্রতিবাদ জানিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন ক্রিকেটার হরভজন সিং। ক্ষুব্ধ হন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংও। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও এ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন।
লাগাতার এধরনের বিভ্রান্তিমূলক আলোচনায় এবার টুইট করে জবাব দিল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর (Home Department of West Bengal)। অভিযোগ, ঘটনাকে সাম্প্রদায়িকতার রং দিয়ে একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল রাজ্যের শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে।
গত বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযান কর্মসূচিতে নেমে দিনভর তাণ্ডবের পরেও নবান্নে পৌঁছতে পারেননি গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। হাওড়া ময়দানের মিছিল আটকে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করে পুলিশ। বলবিন্দর সিং ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেন পুলিশকর্মীরা। গ্রেপ্তার করা হয় বলবিন্দরকে। রাজ্য বিজেপির তরফে বারবার দাবি করা হয়েছে ওই আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। তবে হাওড়া সিটি পুলিশের দাবি, ওই আগ্নেয়াস্ত্রটির লাইসেন্স দিয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরির জেলাশাসক। ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি জেলার বাইরে নিয়ে যাওয়ার আইন নেই। তাই সেই হিসাবে বলবিন্দর বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্রটি বাংলায় নিয়ে এসেছিলেন বলেই দাবি পুলিশের। এ নিয়ে উত্তেজনা বেড়ে চলে। শনিবার বর্ধমান থেকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি মন্তব্য করেন, ”একজন শিখ (Sikh) বলে পাগড়ি খুলে দিয়েছে। যারা বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত তাদের লাথি খেয়ে শান্তিমিছিল করে। আমরা আইন মানি বলেই এসব হচ্ছে। এসব অগণতান্ত্রিক এবং তোষণের রাজনীতি।” অর্থাৎ স্পষ্টতই তিনি সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করলেন।
এ সবের পর আর হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি নবান্ন। শান্তি বজায় রাখতে পালটা টুইট করেছে স্বরাষ্ট্র দপ্তর। তাতে লেখা, এ রাজ্যে শিখ ভাইবোনেরা খুব শান্তিতেই বসবাস করেন। সেদিন বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক শিখের গ্রেপ্তারির ঘটনাকে এখন অন্যভাবে দেখা হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল সংকীর্ণতা দেখিয়ে রাজ্যের শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু রাজ্যবাসী মোটেই এসবে অভ্যস্ত নয়। তাই তাঁরা নিজেদের মতো করে শান্তি বজায় রাখবেন। শিখ ভাইবোনদের প্রতি আমাদের সরকারের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা, সম্মান আছে।