প্রবীণ নাগরিকসহ আরো ৩৮ ছাড়ে কোপ রেলে
রেলযাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ! মাথায় হাত প্রবীণ নাগরিকদের! প্রবল আর্থিক সঙ্কট আর মূল্যবৃদ্ধির বিভীষিকার মধ্যে রেল টিকিটের উপর ছাড় (কনসেশন) প্রায় তুলেই দিল মোদি সরকার। তবে, ছাড়ের সুবিধায় বহাল তবিয়তে থাকছেন সাংসদ-বিধায়করা!
কোভিড মহামারীর আগে প্রায় ৫৩ ধরনের ছাড় পেতেন যাত্রীরা। রেলবোর্ড সূত্রে খবর, বর্তমানে ৩৮ ধরনের ছাড়ের উপর কোপ পড়েছে। টিকিটের দামের উপর ১০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পেতেন বিভিন্ন পর্যায়ের যাত্রীরা। সে সব এখন অতীত। এর ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে চলেছেন প্রবীণ নাগরিকরা। আগে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ ছাড় পেতেন তাঁরা। নয়া নিয়মে একটা কানাকড়িও জুটছে না তাঁদের কপালে। বঞ্চিত হচ্ছেন পড়ুয়ারা। ছাত্রছাত্রী বলে কনসেশন নেওয়ার রেওয়াজ এবার শেষ। ছাড়ের তালিকায় বাদ পড়েছেন প্রতিষ্ঠিত ক্রীড়াবিদ, সংস্কৃতি জগতের লোক, যুদ্ধে জয়ী সেনা, জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার প্রাপক সহ বহু ক্ষেত্রের মানুষ।
এখানেই গুরুতর একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে রেলমন্ত্রক। আমজনতার করের টাকায় ছাড় পেতেন সাধারণ যাত্রীরা। সেটা তুলে দেওয়া হলে কেন নেতা-নেত্রীরা সুবিধা পাবেন? রেল বোর্ডের এক কর্তার যুক্তি, ভারতীয় রেল তীব্র আর্থিক অনটনে চলছে। ১০০ টাকা আয় করতে রেলের খরচ ১৫০ টাকা। তার উপর এই মুহূর্তে ৯০ শতাংশ ট্রেন বসে। তাই ছাড় তুলে বাড়তি লোকসান ঠেকানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। ভবিষ্যতেও কি ধীরে ধীরে ছাড়ের নীতি থেকে পুরোপুরি সরে আসবে রেল? জবাবে ওই কর্তা বলেন, ‘করোনা পরবর্তী সময়ে রেলভাড়া বৃদ্ধি করা যাবে না। তাই ঘুরপথে আয় বাড়াতে ছাড়ের সুবিধা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে পাকা সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।’ প্রতিবছর কনসেশন বাবদ কয়েকশো কোটি টাকা ব্যয় হয় রেলের। এবার তার পুরোটাই সাশ্রয় হবে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা।
কোভিড পরিস্থিতিতে এখন দেশে ২৮৮টির মতো স্পেশাল ট্রেন চলছে। আগামীদিনে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। কিন্তু ভাড়ায় আর ছাড় মিলবে না। এ ব্যাপারে রেলের অবস্থান মোটামুটি স্পষ্ট। ছোটদের জন্য তৈরি হয়েছে নয়া নিয়ম। ৫ থেকে ১২ বছরের বাচ্চাদের বার্থ বুক করলে গুনতে হবে পুরো ভাড়া। অভিভাবকের সঙ্গে থাকলে (বিনা বার্থ বুকিংয়ে) লাগবে অর্ধেক। শুধুমাত্র ১৫টি ক্ষেত্রে রেলভাড়ায় ছাড় মিলছে। বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য চিহ্নিত ৪টি ক্ষেত্র। বাকি ১১টি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য। এ প্রসঙ্গে রেল বোর্ডের ওই কর্তা জানিয়েছেন, যে ক্যাটিগরিতে ছাড় অনুমোদন করা হয়েছে, তাতে নামমাত্র আবেদন জমা পড়ছে। কারণ, এইডস সহ একাধিক রোগী এখনও প্রকাশ্যে আসতে চান না।