বিনামূল্যে ভরপেট মাংস-ভাত খাওয়াবে ‘মমতাময়ীর হেঁশেল’, উদ্যোগে কসবার কাউন্সিলর
অবিকল যেন বামেদের স্লোগান। অথচ উদ্যোগ সম্পূর্ণ বিপরীত ভাবাদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলের। পুজোর দিনগুলোয় উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে কসবা অঞ্চলের দরিদ্র মানুষজনকে পেট ভরিয়ে মাংস-ভাত খাওয়ানোর আয়োজন করেছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর (TMC Councillor) সুশান্ত ঘোষ। এ নিয়ে হোর্ডিংয়ে লেখা – উৎসবের মরশুমে/ কেউ খাবে কেউ খাবে না/ তা হবে না তা হবে না। লকডাউনের সময়ে এই স্লোগানই শোনা গিয়েছিল যাদবপুরের বামেদের শ্রমজীবী ক্যান্টিনে (Community Kitchen), যেখানে লকডাউনে কাজ হারানো মানুষগুলোর জন্য নামমাত্র খরচে দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করা হয় বামপন্থী ছাত্র, যুবদের উদ্যোগে। দেড়শো দিন পেরিয়ে আজও চলছে সেই ক্যান্টিন। ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তেও।
এই উদ্যোগ দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে রাজ্যের শাসকদলও। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) সামনে রেখে এমন সমাজকল্যাণমূলক কাজে নেমেছেন। হাওড়ার ‘মমতার মমতা’ থেকে বারাকপুরের ‘দিদির রান্নাঘর’ – সব হেঁশেল থেকেই দরিদ্রদের জন্য নামমাত্র খরচে পেট ভরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে তার মধ্যেও খানিক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ কসবায়। কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের পরিকল্পনা অনুযায়ী, পঞ্চমী থেকে দশমী বিনামূল্যে খাওয়ানো হবে দৈনিক প্রায় হাজার খানেক মানুষকে। তাও আবার স্রেফ পেট ভরানোর খাবার নয়, মাংস-ভাত খাওয়ানো হবে অতিথি আপ্যায়ণে। কীভাবে এখান থেকে খাবার সংগ্রহ করবেন? পঞ্চমী থেকে রোজ সকালে হাজার কুপন বিলি করা হবে। দুপুর ১২টা থেকে শুরু হবে খাবার পরিবেশন। এই উদ্যোগের নাম তিনি দিয়েছেন – ‘মমতাময়ীর হেঁশেল’।
এমনিতেই কসবা এলাকার কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ বছরভর নানা সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে। করোনা কিংবা আমফান অথবা লকডাউন বলে আলাদা করে কিছু নয়। ছোট-বড় নানা উদ্যোগে সবসময়ই শামিল তিনি। বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজোয় সবাইকে নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠার মন্ত্রেই তিনি বিশ্বাসী বরাবর। সেইমতো কাজও করেন।
এবার তাঁর উদ্যোগ আরও বৃহৎ পরিসরে। দরিদ্র মানুষজনকে বিনামূল্যে অতিথির সমাদরে খাওয়ানো। যদিও এই উদ্যোগের মূল কথা নিয়ে কিছুটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। উৎসবের মরশুমে/ কেউ খাবে কেউ খাবে না/ তা হবে না তা হবে না – এই স্লোগান বামেদের থেকে নকল করা বলে দাবি তুলেছেন কোনও কোনও বামমনস্ক ব্যক্তি। তবে তাতে কর্ণপাত না করে নিজের প্রচেষ্টার সফলভাবে বাস্তবায়িত করার পথেই এগোচ্ছেন সুশান্তবাবু।