ধর্মস্থান খোলা নিয়ে মহারাষ্ট্রে রাজ্যপাল-উদ্ধব থ্যাকারের দ্বন্দ্ব চরমে
মার্চে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে মহারাষ্ট্রে বন্ধই রয়েছে ধর্মস্থানগুলি। আনলক পর্ব শুরু হয়ে যাওয়ার পরেও সেগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই ইস্যুতে এবার রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি ও মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারের মধ্যে শুরু হল তীব্র বাগযুদ্ধ। নেপথ্যে রাজ্যপালের একটি চিঠি। কোশিয়ারি তাঁর চিঠিতে ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন, কোভিড বিধি মেনে রাজ্যের ধর্মস্থানগুলি খুলে দেওয়া হোক। কিন্তু সেই সঙ্গেই উদ্ধবকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ ও ‘হিন্দুত্ব’ নিয়ে তীব্র খোঁচা দিয়েছেন। পাল্টা চিঠিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর চাঁচাছোলা জবাব, হিন্দুত্ব নিয়ে তাঁর রাজ্যপাল বা অন্য কারও সার্টিফিটিকেটের প্রয়োজন নেই।
সোমবার উদ্ধবকে পাঠানো চিঠিতে কোশিয়ারি লিখেছেন, ‘আপনি দীর্ঘদিন ধরেই হিন্দুত্বের পক্ষে জোরালো সওয়াল করে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর অযোধ্যায় গিয়ে প্রভু রামের প্রতি আপনার ভক্তির জানান দিয়েছেন। সেই আপনিই কি কোনও দৈব আদেশে ধর্মস্থান খুলে দেওয়ার বিষয়টি বারবার পিছিয়ে দিচ্ছেন? অবাক লাগছে। আপনি কি ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হয়ে পড়লেন? এই ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটিকে তো আপনি ঘৃণা করতেন!’ রাজ্যপাল আরও লিখেছেন, ‘পানশালা, রেস্তরাঁ ও সমুদ্র সৈকত খুলে দেওয়া হলেও আমাদের দেবদেবীদের ‘লকডাউনে’ রাখা হয়েছে।’ পাল্টা জবাবে উদ্ধব লিখেছেন, ‘আমি কোনও দৈব আদেশ পেয়েছি কি না, আপনি জানতে চেয়েছেন। আপনি হয়তো তেমন কিছু পেয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু দৈব আদেশ পাওয়ার মতো উচ্চতায় আমি পৌঁছতে পারিনি।’
রাজ্যপালকে পাল্টা খোঁচা দিয়ে কঙ্গনা রানাওয়াত ইস্যুও টেনে এনেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। অভিনেত্রীর নাম না নিয়ে উদ্ধব লিখেছেন, ‘যিনি মুম্বইকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর বলেছিলেন, আপনি তাঁকে হাসি মুখে স্বাগত জানিয়েছেন। এটা আমার হিন্দুত্বের সংজ্ঞায় নেই। মন্দির ফের খুলে দেওয়া হল নাকি তা পিছিয়ে দেওয়া হল তার সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতার কোনও সম্পর্ক নেই। আপনি যে সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছিলেন, সেটা কি ভুলে গেলেন? সংবিধানের মধ্যেই ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি রয়েছে। আপনি কি তা খারিজ করছেন?’ উদ্ধবের পাশে দাঁড়িয়ে কোশিয়ারিকে আক্রমণ করেছেন শিবেসনার জোটসঙ্গী এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে পাওয়ার জানিয়েছেন, রাজ্যপাল যে ভাষায় কথা বলছেন, তাতে তিনি বিস্মিত।