হাথরসে ধর্ষণের শিকার এবার ৪ বছরের শিশু
দলিত তরুণীকে গণধর্ষণের এক মাসের মধ্যেই হাথরসে ফের ধর্ষণের ঘটনা ঘটে গেল। এ বার ধর্ষিতা চার বছরের এক শিশুকন্যা। হাথরসের সাসনি এলাকায় শিশুটির বাড়ি। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণ করেছে তারই এক আত্মীয়। গত কাল ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
এ দিকে, দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ভাবমূর্তি যে ভাবে ধুলোয় মিশেছে, এ বার তা উদ্ধার করতে নেমেছে তারা। সুপ্রিম কোর্টে উত্তরপ্রদেশ সরকার আজ জানিয়েছে, হাথরসের ঘটনায় আদালতের নজরদারিতে নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়ে সিবিআই তদন্ত চাইছে তারা। সিবিআই যাতে ১৫ দিন অন্তর তদন্তের অগ্রগতি রাজ্য সরকারকে জানায় এবং বিষয়টি তারা শীর্ষ আদালতে পেশ করতে পারে, এমন প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। ১৯ বছর বয়সি তরুণীকে গণধর্ষণ, সেই মামলা এগিয়ে নিয়ে যেতে পুলিশের বিরুদ্ধে টালবাহানার অভিযোগ, দিল্লির হাসপাতালে তরুণীর মৃত্যু, তার পর রাতের অন্ধকারে পরিবারের সম্মতি ছাড়া মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার একে ‘বিদেশি চক্রান্ত’ আখ্যা দিয়ে, বিরোধীদের গ্রেফতার করেও পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি। গত সোমবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে, পরিবারের সম্মতি ছাড়া তরুণীর দেহ পুড়িয়ে দিয়ে মৃতা ও তাঁর পরিবারের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে প্রশাসন। ওই তরুণী ধনী পরিবারের সদস্য হলে তাঁর পরিবারের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হত কি না, তা নিয়ে হাথরসের জেলাশাসককে সরাসরি প্রশ্ন করেছেন বিচারপতিরা। এমনকি, মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার পিছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কিংবা অন্য যে সব কারণ দেখিয়েছে যোগী প্রশাসন, আদালতে তা-ও টেকেনি।
এই পরিস্থিতিতেই সুপ্রিম কোর্টে উত্তরপ্রদেশ সরকার আজ বলেছে, নির্যাতিতার পরিবার ও সাক্ষীদের নিরাপত্তার পুরোপুরি ব্যবস্থা করতে তারা দায়বদ্ধ। রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছে, তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট ১৫ দিন অন্তর সিবিআই যাতে রাজ্য সরকারকে দেয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হোক। সে ক্ষেত্রে পুলিশ প্রধানের মাধ্যমে সেটি তারা সুপ্রিম কোর্টে পেশ করতে পারে। হলফনামা দিয়ে যোগী সরকার জানিয়েছে, নির্যাতিতার পরিবার ও ঘটনার সাক্ষীদের জন্য এখন ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার বলেছে, নির্যাতিতার ভাই পুলিশকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, পরিবারের তরফে আইনজীবীর ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। তবে সরকারি আইনজীবীও যাতে এই মামলায় সহযোগিতা করেন, সেই অনুরোধ করেছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টে কাল হাথরস মামলার শুনানি। তার আগে ওই ঘটনা নিয়ে নতুন করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সেখানে পুলিশ, হাসপাতাল-সহ রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা এবং তফসিলি জাতি, জনজাতি নিপীড়ন প্রতিরোধ আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ এনে আবেদন জমা হয়েছে।