করোনা আবহে ভাবনায় বদল ভবানীপুরের
অন্তত একবার ঘুরে দেখুন মণ্ডপ। প্রতি বছর পুজোর উদ্যোক্তাদের মুখে মুখে এই বার্তাই শোনা যায়। থিম নিয়ে ভাবনাচিন্তা, মণ্ডপের সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা- এসবই তো তাঁদের জন্য। কিন্তু চলতি বছর করোনাসুরের দাপটে খানিক ফিকে মার আগমনী। ব্যতিক্রমী বছরে তাই এবার ভবানীপুরের অবসর সর্বজনীন মণ্ডপ কোনও দর্শনার্থীর আনাগোনা চায় না। পরিবর্তে তাঁদের বক্তব্য, দূর থেকেই করুন প্রতিমা দর্শন। আর অতিমারী আবহে সুস্থ থাকুন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে খোলামেলা মণ্ডপ করার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই বার্তাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে অবসর সর্বজনীন। সম্পূর্ণ খোলামেলা মণ্ডপ ভাবনা উদ্যোক্তাদের। থিমের নাম ‘প্রশ্ন’। ধোঁয়া, ধুলো, দূষণে ক্রমশ কী আমরা পৃথিবীকে আর্বজনার স্তূপে পরিণত করে ফেলেছি, থিম ভাবনার মাধ্যমে সেই প্রশ্নই আমজনতার দিকে ছুঁড়ে দিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। শিল্পী শিবশংকর দাসের হাতের ছোঁয়ায় জানলা, দরজা, টিন, কাগজের বাক্স দিয়েই মূলত সেজে উঠছে মণ্ডপ। প্রতিমায় থাকছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
পুজোয় বাহুলতা না দেখিয়ে সামাজিক কাজে ব্রতী উদ্যোক্তারা। অতিমারী পরিস্থিতিতে কোনও চাঁদাও নেওয়া হচ্ছে না। তাই বাজেটে কাটছাঁট করতে হয়েছে অনেকটাই। তা সত্ত্বেও আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকাতেও ত্রাণ বিলি করেছেন তাঁরা। পুজোতেও সুন্দরবনের কিছু মেধাবী দরিদ্র পড়ুয়াদের পাশে থাকার পরিকল্পনা রয়েছে এই পুজো কমিটির।
কিছু বদলের কথাও ভেবেছেন পুজো উদ্যোক্তারা। প্রথমত, এবার মণ্ডপ হবে একেবারেই খোলামেলা। দর্শনার্থীদের মণ্ডপের ভিতরে ঢুকে প্রতিমা দর্শনের সুযোগ দেওয়া হবে না। এমনকী মণ্ডপের সামনে জড়ো হয়ে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না কাউকেই। স্যানিটাইজেশনের বন্দোবস্ত তো থাকছেই।
মন না চাইলেও কোভিড পরিস্থিতিতে অষ্টমীর অঞ্জলির ক্ষেত্রেও নিয়ম বদলের ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। ঠিক কীরকম বদল? মণ্ডপ থেকে পুরোহিত মন্ত্র পড়বেন। তা মাইক্রোফোনের মাধ্যমে ধ্বনিত হবে গোটা এলাকায়। বাড়িতে বসেই মন্ত্রপাঠ করবেন এলাকার সকলে। অঞ্জলি শেষে পাড়ার যুবকরা প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফুল সংগ্রহ করবেন। তা এনে মায়ের পায়ে অর্পণ করা হবে। যদিও অঞ্জলি দেওয়ার নিয়ম বদল নিয়ে এখনও পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।