মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স নিয়ে কেন্দ্র শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবে, জানালেন মোদি
হাথরস থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিত্যদিন একের পর এক নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, খুনের ঘটনার সমালোচনায় মুখর গোটা দেশ। সরব বিরোধীরাও। তার মধ্যেই শুক্রবার এক ভিডিয়ো-অনুষ্ঠানে এ সব নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে তিনি টেনে আনলেন মেয়েদের বিয়ের বয়সের প্রসঙ্গ।
মোদীর কথায়, “মেয়েদের বিয়ের ঠিক বয়স কত হওয়া উচিত, তা নিয়ে জরুরি শলা-পরামর্শ চলছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সচেতন মহিলারা আমাকে চিঠি পাঠান। লেখেন, দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন। প্রশ্ন করেন, কমিটির রিপোর্ট এখনও আসেনি কেন? আমি তাঁদের সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, রিপোর্ট আসার সঙ্গে সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি সরকার ওই ব্যাপারে পদক্ষেপ করবে।”
অনেকেই প্রশ্ন, শুধু আইন করে বিয়ের বয়স বাড়িয়ে লাভ হবে কতটুকু? প্রথমত, এখন আঠারোর নীচে বিয়ে আইনত নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও, আর্থ-সামাজিক কারণে তার কমবয়সি মেয়েদের বিয়ে হয় আকছার। বিশেষত গ্রামে এবং আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা বহু পরিবারে। কোথাও তার কারণ মেয়েদের বোঝা ভাবার প্রবণতা, তো কোনও ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি বিয়ে দেওয়া হয় স্কুলছুট মেয়েকে বেশি দিন বাড়িতে বসিয়ে রাখতে না-চাওয়ার কারণে। আবার একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ, মেয়ে একটু বড় হলেই তার সঙ্গে ধর্ষণ কিংবা শ্লীলতাহানির মতো অপরাধ ঘটে যাওয়ার আতঙ্ক। তাই বিয়ের বয়স পিছোতে সবার আগে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি বলে ওই সমস্ত সমীক্ষার দাবি।
এ সব প্রসঙ্গ অবশ্য তোলেনইনি মোদী। বরং নিজের সরকারের নানা প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে তার দাবি, শৌচালয় তৈরি থেকে শুরু করে বাড়ির দরজায় পানীয় জলের বন্দোবস্তের মতো বিভিন্ন প্রকল্পে সব থেকে সুবিধা হবে পরিবারের মহিলাদেরই। তাঁর দাবি, “এখন গরিব মা-বোনেদের এক টাকায় স্যানিটারি প্যাড দেওয়া হচ্ছে। দেশে এই প্রথম স্কুলে ভর্তির অনুপাতে (গ্রস এমরোবমেন্ট রেশিয়ো) ছেলেদের টপকে গিয়েছে মেয়েরা।।” কিন্তু মেয়েদের নিরাপত্তার মতো বিষয়টি নিয়েই চুপ থেকেছেন তিনি। অনেকেই বলছেন, এ দেশে মেয়েদের সামজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না-পারলে, একটু উঁচু ক্লাসে ওঠার পরে অনেক পরিবারে মেয়েদের স্কুল থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতায় দাঁড়ি টানা যাবে না। সরকারি ভাবে বিয়ের বয়স বাড়ানোর থেকে বরং এ দিকে নজর দেওয়া জরুরি।