করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ রেমডেসিভিয়ার, জানাল হু
তালিকায় কে নেই! খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে প্রবীণ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, লক্ষ লক্ষ করোনা-রোগীকে এত দিন ‘রেমডেসিভিয়ার’ দেওয়া হয়েছে। যদিও গত কাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) তাদের ট্রায়ালের রিপোর্টে দাবি করল, হাসপাতালে ভর্তি করোনা-রোগীদের উপরে কার্যত কোনও কাজ করছে না ওষুধটি।
গত ১ মে মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা ‘গিলিয়াড সায়েন্সেস’-এর অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভিয়ার-কে জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের ছাড়পত্র দেয় মার্কিন ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ কন্ট্রোল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’। এর পর ভারত-সহ বহু দেশ ওষুধটি প্রয়োগে ছাড়পত্র দিয়েছিল। কিন্তু হু-এর রিপোর্ট এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
হু-এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগে বিশ্বের ৩০টি দেশের ১১ হাজারের বেশি করোনা-আক্রান্তকে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার পরীক্ষার ফল বেরোয়। তাতে বলা হয়েছে, রেমডেসিভিয়ার দেওয়ায় করোনা-রোগীদের হাসপাতালে থাকার মেয়াদ কমেনি। মৃত্যু রুখতেও কাজ দেয়নি। অর্থাৎ কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় এর কার্যকারিতা শূন্য।
করোনার চিকিৎসায় কোন ওষুধ কেমন কাজ দিচ্ছে, বা আদৌ কোনও কাজ দিচ্ছে কি না, তা জানতে ‘সলিডারিটি ট্রায়াল’ শুরু করেছিল হু। রেমডেসিভিয়ার ছাড়াও এই পরীক্ষায় বসেছিল ম্যালেরিয়ার ওষুধ ‘হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন’, এইচআইভি-র চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ‘লোপিনাভিয়ার’ এবং ‘ইন্টারফেরন’। বিশ্বের ৩০টি দেশের ১১,২৬৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক রোগীকে এই চারটি ওষুধ পরীক্ষামূলক ভাবে দেওয়া হয়েছিল। এর পর ২৮ দিনের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ফলাফল বিচার করে হু-এর সিদ্ধান্ত— রেমডেসিভিয়ারের কার্যকারিতা প্রায় কিছুই নেই। তবে তারা জানিয়েছে, পুনর্বিবেচনা করে দেখা হবে ফলাফল। রিপোর্টটি হু-এর ‘প্রি-প্রিন্ট’ সার্ভারে আপলোড করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। হু-র অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন জানান, কার্যকারিতা না মেলায় জুন মাসেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং লোপানিভিয়ারের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অন্য দু’টি পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া হয় ৩০টি দেশের পাঁচশোর বেশি হাসপাতালে। সৌমা বলেন, ‘‘আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছি। গত কয়েক মাসে তৈরি হওয়া নতুন ওষুধের উপরে নজর রাখছি।’’