রাজ্যে চালু হচ্ছে বাংলা সহায়ক কেন্দ্র
কথায় আছে জিরে থেকে হীরে সব জিনিসই এক ছাতার তলায় পাওয়া যায় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সেই পথে হেঁটেই এক জানালা পরিষেবা দেবে বাংলা সহায়ক কেন্দ্রের মাধ্যমে। এব্যাপারে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সব দপ্তরকে সার্কুলার পাঠিয়ে বলেছেন, কন্যাশ্রী থেকে বাড়ির কর মেটানো— এক জানালা পরিষেবার মাধ্যমে সব দপ্তর মিলিয়ে ২০২টি বিষয়ে রাজ্যের ১০ কোটি মানুষকে যাবতীয় তথ্য ও পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। এই সর্ববৃহৎ ই-গভর্ন্যান্স প্রকল্পের যাবতীয় সুবিধা বাংলার গ্রাম-শহরের মানুষ সম্পূর্ণ নিখরচায় পাবেন।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, বিভিন্ন দপ্তরের আওতায় চলা পেনশন, সার্টিফিকেট, দ্রব্য বিতরণ, আর্থিক সহায়তা সহ সব সুধিবাই সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে মানুষ পাবেন। গোড়ায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে মোট ২,৭৪৪টি কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা করেছিল সরকার। এরমধ্যে ২,৭২১টি কেন্দ্র পরিষেবা দিতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুত। এই কাজের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে কম্পিউটার জানা চৌখস যুবক-যুবতীদের। আপাতত ৩৪২টি বিডিও এবং ৬৬টি এসডিও অফিসে খোলা হবে এই কেন্দ্র। পাশাপাশি দেড় হাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ৮১৩টি গ্রামীণ গ্রন্থাগারেও তৈরি করা হয়েছে এই পরিকাঠামো। মানুষ এই সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের যাবতীয় প্রকল্প সম্পর্কে তথ্য পাবেন নিমেষে। একইসঙ্গে প্রাপ্য সুবিধাগুলি নিয়ে অনলাইনে আবেদনও জমা করতে পারবেন।
নবান্ন সূত্রের খবর, ই-গভর্ন্যান্স পদ্ধতির উপর মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন দপ্তর এতদিন তাদের মতো করে বেশ কিছু অনলাইন পরিষেবা চালু করে। রাজ্যের এই উদ্যোগকে তারিফ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকী, কয়েকটি ক্ষেত্রে পুরস্কারও পেয়েছে রাজ্য। তবে এখানে থেমে না থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যাবতীয় পরিষেবাকে এক ছাতার তলায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এই পরিকল্পনার কথা মাসকয়েক আগেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন। মুখ্যসচিব সেই ঘোষণাকেই কার্যকর করার পথে হাঁটলেন সার্কুলার জারি করে।
নবান্নের কর্তারা বলছেন, এই ব্যবস্থা চালু হলে ই-গভর্ন্যান্সের ক্ষেত্রে বাংলা শুধু অন্য রাজ্যকে নয়, কেন্দ্রের সরকারকেও টেক্কা দিতে পারবে। সর্বোপরি, ইজ অব ডুয়িং বিজনেস বা ব্যবসা করার সুবিধার সূচকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবে রাজ্য। সেক্ষেত্রে আগামীদিনে শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগের দরজা আরও বেশি করে খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে রাজ্যে। প্রসঙ্গত, এতদিন কিছু ফি’র বিনিময়ে বিক্ষিপ্তভাবে পরিষেবা দিত তথ্যমিত্র কেন্দ্রগুলি। এখন বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালু হলে তথ্যমিত্র কেন্দ্রগুলি গুটিয়ে নেওয়া হবে বলেই ঠিক হয়েছে।