দুর্গা পুজোয় বাড়ি বসে দেখুন এই ছবিগুলি
চলে এসেছে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পুজো। আর দুর্গা পুজো আর সিনেমা মুক্তি অঙ্গাআঙ্গিক ভাবে জড়িত। প্রতি বছরের এই সময়টিতে যেমন আমরা পুজোর প্রতীক্ষা করি, তেমনিই করি ভালো ছবির প্রতীক্ষা। প্রিয় নায়ক-নায়িকা বা নির্দেশকের কাজ দেখার জন্যে এই সময় মুখিয়ে থাকে বাঙালিরা। পুজোয় ছবি মুক্তির এই প্রথা এখন বাঙালি সংস্কৃতির এক ঐতিহ্যবাহী অঙ্গ।
কিন্তু এবারের পরিস্থিতিটা অনেকটাই আলাদা। এই করোনা সঙ্কটে সিনেমাহলে ছবিমুক্তি একপ্রকার ইতিহাস হয়ে গেছে। সিনেমা হলগুলি আস্তে আস্তে খোলা শুরু হলেও আসন সংখ্যা বেঁধে দেওয়ায় অনেক প্রযোজনা সংস্থাই ছবি মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দিয়েছে।
কিছু কিছু ছবি আছে যেখানে দুর্গা পুজো আর বাঙালির মধ্যেকার সমীকরণকে অসাধারণভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পথের পাঁচালীতে কাশফুলের বন দিয়ে অপু- দুর্গার ছুটে চলা বা ‘উমা’-য় মা দুর্গার অকাল বোধন যেন এই উৎসবটিকে বাঙালির মনে আরো বেশি করে গেঁথে দিয়েছে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক দুর্গা পুজো নিয়ে তৈরি এরকমই কিছু ছবিঃ
উৎসব
ঋতুপর্ণ ঘোষের অন্যতম নিপুন কাজ। দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে এক পরিবার আবার একত্রিত হয়। উৎসবের আনন্দের মাঝেও সবাই সবার নিজের জীবনের জটিলতার সাথে ক্রমাগত লড়াই করতে থাকে। জীবনের প্রতিটি রঙকে ছবিটিতে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন নির্দেশক।
কাহানী
উৎসবের মরসুমে যখন তিলোত্তমা শহর সেজে উঠেছে তখনই এক মহিলা লন্ডন থেকে তার হারিয়ে যাওয়া স্বামীর খোঁজে কলকাতা আসে। এই খোঁজ করতে করতেই বেরিয়ে আসে অতীতে ভয়ঙ্কর সব সত্যি। বেরিয়ে আসে দেশের সুরক্ষা বিনষ্টকারী বহু তথ্য। ছবিটির গল্পটির সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে যায় দুর্গা পুজো।
জয় বাবা ফেলুনাথ
বাঙালির সাথে আরো একটি বিষয় অঙ্গাআঙ্গিক ভাবে যুক্ত। তা হল ফেলুদা। সত্যজিৎ রায়ের এই ছবিটির প্লট বারানসি। এই বনেদি পরিবারের এক ঐতিহ্যবাহী সম্পদ হারিয়ে যায়। পাচারকারীদের নজর এর আগেও ছিল সম্পদটির ওপর। এক সন্দেহভাজন সাধু ‘মাছলি বাবা’- র আকস্মিক আগমন। এর সাথে দুর্গা পুজোর কি সম্পর্ক জানতে চান? তার জন্যে দেখতে হবে ছবিটি।
উমা
এক কিশোর ইভার লেভারসেজের বাস্তব জীবনের গল্পের ওপর ভিত্তি করে তৈরি ছবিটি। যার শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে ক্রিস্টমাস উৎসবকে এক মাস এগিয়ে এনেছিল তার শহরবাসীরা। ছবিটিতে উমা অসুস্থ এক বাঙালি মেয়ে যে তার বাবার সাথে সুইজারল্যান্ডে থাকে। সে তার বাবাকে জানায় সে কলকাতার দুর্গা পুজো দেখতে চায়। তার শেষ ইচ্ছে রাখতে তার বাবা আকাশ পাতাল এক করে দেয়।
অন্তরমহল
ঋতুপর্ণ ঘোষের এই ছবিটি নিজের সময় থেকে অনেকটা এগিয়ে। কিন্তু সেভাবে প্রশংসিত হয়নি। ব্রিটিশ আমলের জমিদার বাড়ির অন্দর মহলের কঙ্কালসার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছবিটিতে। এক যুবক কুমোর প্রতিমা বানাতে আসে, প্রতিমা বানায়। ছবিটি শেষ হয় ভাগ্যের এক নির্মম পরিহাস দিয়ে।
বোধন
অর্চি এবং ঈশানী এযুগের কলকাতায় বসবাসকারী দম্পতি। দুজনেই বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করে। এক মহালয়ায় তাদের জীবন আমুল পাল্টে যায় যখন তাদের ছেলের হার্ট অ্যাটাক হয়। মা দুর্গার বোধনের ছয়দিন ধরে পরিবারটি নিজেদের জীবনের সাথে লড়তে থাকে এবং নতুন করে নিজেদের আবিস্কার করে।
দেবীপক্ষ
ছবিটিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। প্রতিটি মেয়ের ভেতরকার উদযাপন এবং প্রতিশোধকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে ছবিটিতে। কোয়েল মল্লিক এবং শতাব্দী রায়ের অভিনয়ও অসাধারণ।