দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

দর্শনার্থীদের জন্য খোলা সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির সিংহদুয়ার

October 21, 2020 | 2 min read

বিরাট বিরাট থামের আড়াল থেকে শরতের মিঠে রোদ লুকোচুরি খেলে ঠাকুর দালানে। খাটো ধুতি পরে শতাব্দীপ্রাচীন সেই দালান পরিষ্কার করছেন বাড়িরই এক কর্মী। অন্যবার এখানেই পুজোর পর পাত পেড়ে খেতে বসেন বাড়ির সদস্য, আমন্ত্রিতরা। হাসির ফোয়ার ছোটে, খোশ গল্প হয়। কিন্তু কোভিডের কারণে এবারে সেই আনন্দের জোয়ারে বেশ খানিকটা ভাটা পড়েছে। 

বাড়ির সদস্য দেবর্ষি রায়চৌধুরী জানান, ১৬১০ সালে বড়িশায় প্রথম একচালার দুর্গা পুজোর প্রচলন হয়। উদ্যোক্তা সাবর্ণ রায়চৌধুরী উপাধিধারী লক্ষ্মীকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়। শোনা যায়, মুঘল সম্রাটদের কাছ থেকে রায় ও চৌধুরী উপাধি লাভ করেছিলেন তিনি। এই বছর ৪১১তম পুজো। দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনী মতে একই পরিবারে মোট আটটি বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়।

বড়িশাতে হয় ছ’টি। ‘আটচালাবাড়ি’, ‘বড়বাড়ি’, ‘মেজবাড়ি’, ‘মাঝের বাড়ি’, ‘বেনাকি বাড়ি’ ও ‘কালীকিঙ্করভবন’। অন্য দু’টি ‘বিরাটি বাড়ি’ এবং ‘নিমতা পাঠানপুরবাড়ি’-তে। কাঠামো পুজো হয় জন্মাষ্টমীর দিন। কৃষ্ণনবমীতে বোধন শুরু। প্রতিমার একদিকে থাকেন রাম অন্যদিকে শিব। পাঠানপুরবাড়ি ছাড়া অন্য সকল বাড়িতেই দেবীকে আমিষ ভোগ উৎসর্গ করা হয়। আগে পশুবলির রেওয়াজ থাকলেও এখন তা আর নেই। মা দুগ্গাকে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় মাছ। থাকে সাদা ভাত, পোলাও, খিচুড়ি-সহ আট রকমের ভাজা। 

পঞ্চব্যঞ্জনের পাশাপাশি থাকে দই, পায়েস, মিষ্টি, চাটনি এবং পান। দশমীকে দেবীকে দেওয়া হয় পান্তাভাত, কচুশাক, ইলিশ মাছ ও চালতার চাটনি। এই বাড়ির একটি বিশেষ রীতির মধ্যে অন্যতম হল মাসোভক্তবলি। ১৮০টি খুরিতে মাসকলাই, দই, ঘি মেখে অপদেবতাদের তা নিবেদন করা হয়। প্রতিমা নিরঞ্জন হয় গঙ্গাবক্ষে বা বাড়ির প্রতিষ্ঠিত পুকুরেই। 

এই বছর ‘বড়বাড়ি’ এবং ‘কালীকিঙ্করভবন’-এর দেবী প্রতিমার উচ্চতা কমানো হয়েছে। ঠাকুর দালানে বসে ভোগ খাওয়াও এবারে বন্ধ। কমানো হয়েছে ঢাকিদের সংখ্যা। দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ অবাধ। তবে আমন্ত্রণের ব্যাপার নেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga Pujo, #Durga Puja 2020

আরো দেখুন