বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

এখন দুর্গা পুজোর উৎসবে মাতেন মহিষাসুরের বংশধররাও

October 25, 2020 | 2 min read

দুর্গাপুজোয় আর অশৌচ না। উৎসবের মরসুমে তারাও মজেন আলোর মেলায়। তাঁরাও দেন অষ্টমীতে পুষ্পাঞ্জলি। নয়া প্রজন্ম আর মানতে চাইছে না পূর্বসূরিদের সংস্কার। এরা অসুর জনগোষ্ঠী। নিজেদের মহিষাসুরের বংশধর বলে দাবি করেন এই সম্প্রদায়।     

অসুর জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস, মহিষাসুর তাঁদের পূর্বপুরুষ। তাই পূর্বপুরুষের হত্যাকারিণী দুর্গার মুখ দর্শন করা নিষেধ তাঁদের। বরং অসুর পুজো করেন তাঁরা। পুজোর ক’দিন বাড়ির চারপাশ কালো কাপড়ে ঘিরে রাখেন শোকের চিহ্ন হিসেবে। তবে সময় বদলেছে। শিথিল হচ্ছে সংস্কারের বাঁধন।  এই অসুর পরিবারের নতুন প্রজন্মরা নিজেদের উপাস্য অবজ্ঞা না করেও মণ্ডপে যায়, অঞ্জলী দেয়।     

উত্তরবঙ্গের কিছু কিছু এলাকায় অসুর সম্প্রদায়ের একটা অংশের বাস। জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটার ক্যারন, গুরজংঝোরা বাগান, আলিপুরদুয়ার জেলার মাঝেরডাবরি, নিমাতিঝোরা এবং শিলিগুড়ির নকশালবাড়ি চা-বাগানে মোট ৬০০টি অসুর পরিবার বাস করে। তার মধ্যে শুধু ক্যারন চা-বাগানেই বাস ৫০০টি অসুর পরিবারের। মূলত চা-বাগানের সাদরি ভাষা বোঝেন তাঁরা। বাংলা-হিন্দি খুব ভালো বোঝেন না। শহুরে মানুষদের থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন এই জনগোষ্ঠী।              

১৯৯১ সালের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, অসুরদের ৫২.৭২ শতাংশ চা-বাগানের শ্রমিক, ১৫.৬৫ শতাংশ কৃষক এবং ১৩.৬ শতাংশ অসুর খেতমজুর। আগে এঁরা সকলেই চা-বাগানের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, বর্তমানে অনেকেই বনবস্তি এলাকার জমিতে কৃষিকর্ম ও খেতমজুরের কাজে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে ৪৮.৬ শতাংশ অসুর সম্প্রদায়ের মানুষ হিন্দু, ৪.৭৮ শতাংশ বৌদ্ধ, এক শতাংশ মুসলিম এবং ১৫.০৫ শতাংশ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। বাকিরা ধোঁয়াশায়। মাঝেরডাবরি চা-বাগানের আনন্দ অসুর বলেন, ‘আমরা মহিষাসুরের বংশধর।

অসুরদের প্রধান উপাস্য সিংবোঙা ও মারাং বোঙা। সিংবোঙাকে সন্তুষ্ট রাখতে উৎসর্গ করা হয় সাদা মোরগ। আর মারাং বোঙাকে সন্তুষ্ট করতে উৎসর্গ করা হয় লাল মোরগ। এঁদের গ্রামদেবতার নাম পাটদেবতা ও মহাদানিয়া। পাহানের কাজ পাটদেবতার পুজো দেওয়া।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga Pujo, #Durga Puja 2020

আরো দেখুন