জলপাইগুড়িতে একই দলের দুটি বিজয়া সম্মেলনী, প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল
জলপাইগুড়িতে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে। জেলা সভাপতি ও বিরোধী গোষ্ঠীর দুই পৃথক বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে কাজিয়া তুঙ্গে। বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জলপাইগুড়িতে প্রকাশ্যে এলো বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল।
জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে একের পর এক তোপ দাগলেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ির রাজনৈতিক মহলে। জলপাইগুড়ি ডি বি সি রোডে বিজেপির পুরোনো কার্যালয়ের বদলে নতুন কার্যালয় তৈরি হবে বলে তা ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ফলে নতুন কার্যালয় এখনও না হওয়ায় এতদিন জলপাইগুড়ি শহরের থেকে দুটি দলীয় কার্যালয় থেকে দল চালাচ্ছিলেন বিজেপির দুই যুযুধান শিবির। জলপাইগুড়ি নতুন পাড়া এলাকায় বাকালী হাউসে কার্যালয় খুলে দল চালাচ্ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা বর্তমানে বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি দীপেন প্রামানিক।
অপরদিকে জলপাইগুড়ি ৪ নং ঘুমটি এলাকায় ঐতিহ্য ভবন নামে একটি ভবন ভাড়া করে দল পরিচালনা করছেন বর্তমান জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী।
এবার এই দুই শিবির বুধবার জলপাইগুড়ি শহরে দুটি পৃথক বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। একই দলের দুটি পৃথক বিজয়া সম্মেলনীর আয়োজন ঘিরে প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল। বুধবার জলপাইগুড়ি মোহিত নগর স্কুল ময়দানে ছিল বিজেপির অন্য একটি গোষ্ঠী জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠান।
অপরদিকে জলপাইগুড়ি পান্ডাপাড়ার শ্রীদয়াল হলে পালটা একটি বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতির বিরোধী গোষ্ঠী। দীপেন প্রামানিক অনুগামীরা এদিন শ্রীদয়াল হলের বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে।
শুধু তাই নয়, ওই গোষ্ঠী ছেড়ে দীপেনবাবুর সঙ্গে যোগ দেয় প্রায় হাজার খানেক কর্মী ও সমর্থকরা বলে দাবি বিরোধী শিবিরের। সম্মেলন মঞ্চ থেকে জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তোপ দাগেন সভায় যোগ দেওয়া নেতা কর্মীরা।
এদিনের সভার পর সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলার প্রাক্তন জেলা সম্পাদক তথা আই টি সেল কনভেনার কানন রায় বলেন, ” আজকের এই বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে যারা এসেছেন তাদের সবাইকে বর্তমান জেলা সভাপতি তথা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর লোকেরা দল থেকে সরিয়ে ব্রাত্য করে রেখেছেন।
আমরা অনেক কষ্টে তাদের বুঝিয়ে দলে রেখেছি তাই তাদের নিয়ে আজকের এই অনুষ্ঠান করলাম। আমরা লক্ষ করলাম বর্তমান জেলা সভাপতি ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমরা লক্ষ করলাম উনি কাজের লোককে সরিয়ে দিয়ে উনার কাছের লোক দিয়ে জেলা চালাচ্ছেন। এর আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “এইভাবে যদি চলতে থাকে আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপির জলপাইগুড়ি সাংগঠনিক জেলার ৮ টি বিধানসভা আসনেই এর প্রভাব পড়বে। দল একটি আসনেও জিততে পারবেনা। তাই আজকের এই অনুষ্ঠান করে আমরা দলের রাজ্য বা অন্যান্য নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। তারাও দেখুক প্রকৃতি বিজেপি কর্মীরা কাদের সঙ্গে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।”
এদিনের বিরোধী গোষ্ঠীর ডাকা বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ নিয়ে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামীকে টেলিফোনে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন এই বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না৷
অপরদিকে বুধবারের এই বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠান নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি দীপেন প্রামানিক।