রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পুজোর ছুটি মিটতেই প্রশাসনিক বৈঠকের প্রস্তুতি মমতার

October 29, 2020 | 2 min read

আর কয়েক মাস পরেই বিধানসভা ভোটের অগ্নিপরীক্ষা। তাই কোনওরকম কালক্ষেপ নয়। পুজোর ছুটি মিটতেই রাজ্য প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে ঝাঁপানোর প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৫ নভেম্বর বেলা আড়াইটেয় নবান্ন সভাঘরে প্রতিটি দপ্তরের মন্ত্রী ও আমলাদের নিয়ে বড় মাপের প্রশাসনিক বৈঠকও ডেকেছেন। সেখানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির থাকবেন সব জেলাশাসক। নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকদের ধারণা, জেলাওয়াড়ি কাজের হিসেব বুঝে নেওয়াই মমতার এবারের এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য। এসব ক্ষেত্রে মন্ত্রী-অফিসারদের রেয়াত করেন না তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠকের জন্য ছুটির মধ্যেই সাজ সাজ রব উঠেছে প্রশাসনিক মহলে। বিভিন্ন দপ্তরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তটস্থ গোটা নবান্ন। বৈঠকের আগাম প্রস্তুতির উদ্দেশ্যে সব দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বা প্রধান সচিবদের একটি নোটও পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি কার্যত রাজ্যওয়াড়ি উন্নয়নের কাজের ফিরিস্তি চেয়ে পাঠিয়েছেন। জনস্বার্থে গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, আগামী ২ নভেম্বরের মধ্যে তা জানাতে হবে মুখ্যসচিবকে।
নবান্ন সূত্রের খবর, বৈঠকে একাধিক দপ্তরের প্রকল্পগুলি সম্পর্কে রিপোর্ট তলব করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এজেন্ডায় প্রথমেই রয়েছে রাজ্যের ১২ হাজার কিমি রাস্তা মেরামতের জন্য গৃহীত ‘পথশ্রী’ অভিযানের প্রতিটি জেলায় ওয়ার্ক অর্ডার ইস্যু এবং তার কাজের অগ্রগতি। পাশাপাশি পুরোহিত ভাতার আবেদনকারী এবং প্রাপকের পরিসংখ্যান তৈরি রাখা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য।

গুরুত্ব পাচ্ছে এক ছাতার তলায় সরকারি পরিষেবা দানের অভিনব ব্যবস্থা, বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের অগ্রগতির বিষয়টিও। কারণ, প্রায় ৩ হাজার ৫০০টি এমন কেন্দ্রে সাত হাজার কর্মসংস্থান হবে। ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দে তৈরি দেশের এই সর্ববৃহৎ ই-গভর্ন্যান্স প্রকল্পে একলপ্তে প্রায় ২৫০টি সরকারি তথ্য ও পরিষেবা নিখরচায় পাবেন রাজ্যের ১০ কোটি মানুষ। রাজ্যের ১০ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত প্রায় এক কোটি মহিলাকে পরিবারভিত্তিক কোভিড পরিস্থিতির হিসেব তৈরির কাজে লাগাতে চান মমতা। আগামী মাস থেকে যাতে তাদের এই কাজে যুক্ত করা যায়, সে ব্যাপারে হোমওয়ার্ক করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সকলকে।

এছাড়া ১০০ দিনের কাজ, মাটির সৃষ্টি প্রকল্প, কোভিড পরিস্থিতিতে সরকারের গৃহীত সর্বশেষ পদক্ষেপগুলি নিয়েও বিস্তারিত চর্চা হতে পারে বৈঠকে। সেই অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে বাড়তি সতর্ক করেছেন মুখ্যসচিব। বিভিন্ন দপ্তর থেকে দেওয়া নানা ধরনের ভাতা, বৃত্তি, দ্রব্যসামগ্রীর চুলচেরা পরিসংখ্যান প্রস্তুত রাখতে বলেছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিক ও জেলাশাসকদের যৌথভাবে রিপোর্ট তৈরি রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। 

নবান্নের কর্তারাই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে কাজের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন। তারপর নিয়ম করে তার অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। শেষে তিনি লক্ষ্যমাত্রা পূরণের খতিয়ান তলব করে কাজের হিসেব বুঝে নেওয়ার পক্ষপাতী। রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে তিনি এ ব্যাপারে কোনও আপস করতে রাজি নন। সামনেই বিধানসভার নির্বাচন। তাই এবার কড়ায়-গণ্ডায় সেই হিসেব বুঝে নিতে চান তিনি। উন্নয়নের প্রশ্নে গয়ংগচ্ছ মনোভাব তাঁর একেবারেই নাপসন্দ। বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে এই ধরনের পরীক্ষায় মুখে ঠেলতে মোটেও পিছপা হন না তিনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #Nabanna, #Administrative Meeting

আরো দেখুন