আগামী নির্বাচনের জন্য ইভিএম পরীক্ষা শুরু রাজ্য নির্বাচন কমিশনের
সদ্য শেষ হয়েছে মাতৃ আরাধনা। আর গণতন্ত্রের মহোৎসবেরও বোধন পর্ব চলছে বঙ্গে! ইভিএম বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের ‘ফার্স্ট লেভেল অব চেকিং’ (এফএলসি) বা প্রথম দফার পরীক্ষার জন্য সামগ্রী পেয়ে গিয়েছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মীর সংখ্যার হিসেব কষছে তারা। পুজোর মরসুম শেষ হলেই আরও গতি বাড়বে ভোট-প্রস্তুতির।
ভোটের দিন জনতার দরবারে পরীক্ষায় বসে ইভিএম। ভোটযন্ত্রে তখন যাতে কোনও বিঘ্ন না-ঘটে, তা সুনিশ্চিত করতে আগেভাগে পরীক্ষা চালানো হয় তিন দফায়। প্রথমে এফএলসি। তার পরে কমিশনিং। শেষে, ভোটের দিন ‘মক পোল’ বা ভোটগ্রহণের মহড়া। তিনটি পরীক্ষায় পাশ করা ভোটযন্ত্রকেই শেষ পর্যন্ত ভোটের কাজে লাগানো হয়।
বঙ্গে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন এফএলসি-র জন্য কন্ট্রোল ইউনিট (সিইউ), ব্যালট ইউনিট (বিইউ) এবং ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ্যাট)-এর ব্যাটারি পেয়ে গিয়েছে। সঙ্গে এসেছে ভিভিপ্যাটের পেপার রোল এবং সিইউ-এর পেপার সিলও। ইভিএমের এফএলসি যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সেই পরীক্ষা পর্ব চলে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে। বিভিন্ন সামগ্রী প্রস্তুত রেখে এফএলসি শুরু করার জন্য আপাতত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা প্রশাসন।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যে বেশ কিছু ভোটযন্ত্র আছে। আরও কিছু প্রয়োজন। প্রথমত, অল্প সংখ্যক যন্ত্রে ত্রুটি ধরা পড়ায় তা নির্মাতা সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ব্যারাকপুর, বারাসত, আরামবাগ ও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে ‘ইলেকশন পিটিশন’ বা ইটি হওয়ায় সেখানকার যন্ত্রগুলি আটকে আছে। এই দু’টি কারণে বেশ কিছু ভোটযন্ত্র আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে না।
বাংলার বিধানসভা ভোটে কত ভোটযন্ত্র লাগবে, কমিশন এখনও সেই হিসেব করেনি। করোনা-কালে ভোট হওয়ায় বিহারে সর্বাধিক এক হাজার ভোটার-পিছু বুথ তৈরি হয়েছে। বঙ্গ-সহ অন্যত্র আপাতত বুথ-পিছু সর্বাধিক দেড় হাজার ভোটার রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। প্রয়োজনে ভোটের সময় অগ্জ়িলিয়ারি বুথ করতে পারে তারা। সেটা অনেকাংশে নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপরে। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বুথ ছিল ৭৮,৭৯৯টি।
ভোটযন্ত্রের স্বাস্থ্যপরীক্ষার পাশাপাশি সরকারি কর্মীর হিসেব শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। বিভিন্ন জেলায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসে কত কর্মী আছেন, সেই তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কর্মীদের পদমর্যাদা, বেতন-কাঠামোর সবিস্তার তথ্যও প্রস্তুত করা হবে। তা থেকেই তৈরি হবে বিধানসভা ভোটের কর্মী-তালিকা। সেই কাজ পুজোর আগেই শুরু করেছে বিভিন্ন জেলা।