ঐতিহ্য আর সমৃদ্ধির শৈল্পিক নিদর্শন লক্ষ্মীর সরা
একসময় সনাতন ধর্মের প্রত্যেক গৃহস্থ বাড়ির দরজায় শোভা পেত লক্ষ্মীর সরা। নতুন ব্যবসায়ীরাও ব্যবসায়ের মঙ্গল কামনায় লক্ষ্মীর সরা ঝুলাতেন। লক্ষ্মীর সরা আমাদের সুপ্রাচীন চিত্রকলার পরিচয় বহন করে। প্রাচীন কালে এখনকার মত ফটো ছিলনা। পোড়ামাটির সরার উপর বিভিন্ন প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করে সে কালের শিল্পীরা লক্ষ্মী সরার পটচিত্র আঁকতেন।
শারদ পূর্ণিমা তিথিতে রাতে লক্ষ্মীর পট বসিয়ে পূজা করতেন। গোলাকার মাটির পাত্রে আঁকা থাকত লক্ষ্মীদেবীর প্রতিকৃতি। সরারও অনেক রকমফের ছিল। এক পুতুল, দুই পুতুল, পাঁচ পুতুল। শিল্পীদের হাতে আঁকা সেই সরার দৃশ্যপট ছিল দেখার মতো। যে সরা বা পটচিত্র যত সুন্দর হত, তার দামও তত বেশি হত। চাহিদা ছিল, তাই ভালো বিক্রিও ছিল।
কিন্তু দিনকাল বদলেছে। তার সঙ্গে বদলেছে মানুষের রুচিও। ধীরে ধীরে সরার জায়গা দখল করেছে কাঠামোতে তৈরি রঙচঙে ঝলমলে প্রতিমা। বাজার কেড়েছে ফ্রেমে বাঁধানো বা ল্যামিনেশন করা ঝকঝকে দেবী লক্ষ্মীর ছবিও। প্রতিযোগিতার বাজারে যে ভাবে পট বা সরাশিল্প ধুঁকছে, তাতে অচিরে হারিয়ে যাওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।