বিহারের ৯৪টি আসনে ভোট আজ
মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় বিহারের ১৭টি জেলার ৯৪টি বিধানসভা আসনে ভোটগ্রহণ। তার আগে রাজনৈতিক তরজা ও আকচাআকচি তুঙ্গে উঠল। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) তীব্র সমালোচনা করলেন তেজস্বী যাদব। লালু-পুত্রের খোঁচা, নীতীশ কুমারের বিদায় ‘নিশ্চিত’। বিহারকে চালানোর ক্ষমতা তাঁর আর নেই। একদিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে তেজস্বী যাদব (Tejashwi Yadav) ও চিরাগ পাসোয়ান (Chirag Paswan)কে একযোগে কটাক্ষ করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য ছিল, একজন ক্রিকেট থেকে (তেজস্বী) ও অন্যজন (চিরাগ) সিনেমা থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। নিজেদের ‘পাবলিসিটি’ উপভোগ করুন তাঁরা। অর্থাৎ বিহারের এই দুই তরুণ তুর্কি নেতার রাজনৈতিক যোগ্যতা নিয়ে পরোক্ষে খোঁচা দেন নীতীশ। এদিন তেজস্বীর পাল্টা জবাব, নীতীশজির হল টা কী? একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হয়ে কীভাবে তিনি এসব বলছেন? ক্রিকেট বা সিনেমা থেকে রাজনীতিতে আসা যায় না? তিনি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারদেরও রাজনীতিতে আসার বিরোধী?
দ্বিতীয় দফার ভোটের (Bihar Election 2020) আগে রাজনৈতিক বিতণ্ডা বাড়িয়েছে জিতনরাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা (হ্যাম)। এলজেপি নেতা রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবিষয়ে তদন্তের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে তারা। হ্যামের এই চিঠি নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। এই অবস্থায় হ্যাম সুপ্রিমো জিতনরাম মাঝির কড়া সলামোচনা করলেন রামবিলাস-পুত্র চিরাগ। এলজেপি সভাপতির বক্তব্য, কিছু লোক এরকম প্রশ্ন তুলছেন দেখে ছেলে হিসেবে অবাক লাগছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন বাবার গুরুতর অবস্থার কথা মাঝিজিকে ফোনে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কখনও দেখতে পর্যন্ত আসেননি। এখন তিনি এসব কথা বলছেন! যাঁরা জীবিত অবস্থায় বাবাকে দেখতে পর্যন্ত আসেননি, তাঁরাই এখন একজন মৃত মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করছেন। এরই মধ্যে পশ্চিম চম্পারণের একটি সভা থেকে আরজেডি-কংগ্রেস জোটকে তীব্র আক্রমণ করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। এই বিজেপি নেতার তোপ, কংগ্রেস (Congress) হোক বা আরজেডি, তারা শুধু মানুষের সঙ্গে প্রতারণাই করতে জানে। যারা আজীবন শুধুমাত্র পরিবারের স্বার্থ নিয়ে ভেবেছে, তারা চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে এখন। কোথায় চাকরি দেবে তারা? ক্ষমতায় থাকার সময় গরিব মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা দূর অস্ত, এমনকী পশুখাদ্য পর্যন্ত হজম করে ফেলেছে তারা।
রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই নীতীশ কুমারের সরকারকে ‘মহিষাসুরের রূপ’ বলে কটাক্ষ করলেন চিরাগ পাসোয়ান। রামবিলাস-পুত্রের তোপ, আপনার নিজের পুলিস যখন দুর্গাভক্তদের উপর গুলি চালাচ্ছে, তার থেকে বড় অপরাধ আর কী হতে পারে? নীতীশ কুমারের সরকার মহিষাসুরের রূপ নিয়েছে। দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2020) সময় রাস্তায় ভিড় হয়, একথা সবার জানা। তাই বলে ভিড় নিয়ন্ত্রণের নামে আপনি গুলি চালাবেন? মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার গত ১৫ বছর ধরে ‘সুশাসন বাবু’র তকমা গায়ে সেঁটে বসে রয়েছেন। কিন্তু এখন তাঁর দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। মুঙ্গেরে পুলিসের ওই গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে তিনি কোনও কথা বলবেন না। দুর্নীতি নিয়েও নীরব থাকবেন তিনি।
তেজস্বীর ১০ লক্ষ সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি যে নীতীশ কুমারের কাছে বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, প্রায় প্রতিদিনই তা তাঁর কথাবার্তায় স্পষ্ট হয়ে পড়ছে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এটা পুরোপুরি অবাস্তব। উনি (তেজস্বী) বলছেন, এর জন্য বছরে সরকারের ১.৪৪ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে। এই টাকা কোনখান থেকে আসবে? উন্নয়নের কাজ কি বন্ধ করে দেওয়া হবে? সরকারি কর্মীদের সময়ে বেতন দেওয়া কি ফের বন্ধ করবে ওরা?