পর্যাপ্ত লোকাল ট্রেন চালাতে হবে, রেলকে চিঠি রাজ্যের
কম ট্রেন, অর্ধেক যাত্রীতে সমস্যা নেই। কিন্তু কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না। স্পষ্ট অবস্থান নবান্নের। হাতে আর মাত্র দু’দিন। তাই পরিষেবা নিয়ে মন্ত্রকের উপর চাপ বাড়াল রাজ্য সরকার। প্রথম থেকেই পর্যাপ্ত লোকাল ট্রেন চালানোর আর্জি জানিয়ে। মঙ্গলবারই এব্যাপারে রেলকে চিঠি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদি। প্রাথমিক বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। পাশাপাশি, তিনি কোভিড প্রোটোকল (Covid Protocol) এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে একটি নোটও পাঠিয়েছেন।
বসে নেই রেলও। শহরতলির পরিষেবা চালুর জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। সাধারণ কাজের দিনের চলা লোকালের ১০-১৫ শতাংশ চালু করা এবং গ্যালপিং ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়ার ইঙ্গিত গতকালই মিলেছিল। এদিন রেল বোর্ড সূত্রে খবর, চালু ট্রেনের ২০ শতাংশই হবে গ্যালপিং। রোটেশন পদ্ধতিতে প্রতিটি লোকালে একটি স্টেশন অন্তর স্টপেজ দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে। অর্থাৎ, প্রথম ট্রেনটি যে স্টেশনে থামবে, দ্বিতীয় ট্রেনটি দাঁড়াবে ঠিক পরের স্টেশনে। যাতে প্রত্যেক যাত্রী ট্রেনে ওঠার সুযোগ পান, আবার অযথা ভিড়ও না হয়। ভিড় নিয়ন্ত্রণ রেল বোর্ডের প্রধান মাথাব্যথা। বৃহস্পতিবার লোকাল ট্রেন চালু নিয়ে রেলের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দ্বিতীয় বৈঠক রয়েছে। সেখানেই এই পরিকল্পনা রাজ্যের সামনে তুলে ধরবেন রেলকর্তারা। আলোচনার পর নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব চিঠির সঙ্গে যে নোট পাঠিয়েছেন, সেখানে অবশ্য পুরোপুরি প্রশাসনিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, স্টেশনের প্রবেশস্থলে থার্মাল স্ক্যান। সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের ভিড় এড়াতে হাওড়া ও শিয়ালদহের সঙ্গে সংযোগকারী পর্যাপ্ত সংখ্যক শহরতলির ট্রেন যে জরুরি, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। ১০-১৫ শতাংশ লোকাল চালানোর প্রস্তাব নিয়ে ইতিমধ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। ট্রেন বাড়িয়ে ভিড় কমানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
রেলের পক্ষ থেকে কিন্তু এখনও তেমন কিছু ভাবা হয়নি। একে বহন ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী, তার মধ্যে অধিকাংশ লোকাল ট্রেনকে (Local Train) গ্যালপিং হলে বিক্ষোভের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তাই ইতিমধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে রেল বোর্ড। গ্যালপিং ট্রেনের স্টেশন বাছতে যাত্রী চাহিদা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ট্রেনটি কোন স্টেশনে থামবে এবং কোথায় নয়—চাহিদা বুঝে তা চূড়ান্ত করা হবে। রেল বোর্ড সূত্রে বলা হচ্ছে, শহর ও শহরতলির প্রতিটি স্টেশনের যাত্রী চাহিদা আলাদা। সেক্ষেত্রে প্রধানত গুরুত্ব দেওয়া হবে স্টেশনগুলির ‘ফুট ফল’ এবং টিকিট বিক্রির পরিমাণকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেল বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) লোকাল ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে করোনা-পূর্ব সময়ে যেসব স্টেশনে ভিড় বেশি হতো, সেগুলিকে আলাদা গুরুত্ব দিতেই হবে। ৫ নভেম্বরের বৈঠকে সেইমতো রাজ্যের কাছে প্রস্তাব পেশ করবে রেল।’