রাজ্যে কালীপুজোয় বাজি বিক্রি ও পোড়ানো নিষিদ্ধ ঘোষণা হাইকোর্টের
কালীপুজো, দীপাবলি, কার্তিকপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো ও ছটপুজো— নভেম্বরের মাসের শেষ পর্যন্ত এই গোটা উৎসবের মরশুমে সম্পূর্ণভাবে বাজি নিষিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট (calcutta High Court) । সারা রাজ্য জুড়ে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নভেম্বর মাস জুড়ে বাজি কেনা, বিক্রি ও ফাটানো নিষিদ্ধ করল আদালত। পাশাপাশি প্রতিমা বিসর্জনেও আলোকসজ্জা বা বাজি ব্যবহার করা চলবে না বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। কোভিড পরিস্থিতিতে করোনা রোগী ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের কথা ভেবে উৎসবের মরশুমে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ করে এমন সমস্ত বাজি নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন অনুসূয়া ভট্টাচার্য। এদিন সেই মামলারই শুনানি ছিল।
তবে এই নির্দেশ ঠিকঠাকভাবে মানা হচ্ছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে রাজ্যের পুলিশের ওপর দিয়েছে আদালত। বিচারপতি জানিয়েছেন, পুলিশকে কড়া হাতে বাজি ক্রয়–বিক্রয় বা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাজি কোথাও ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তা দেখতে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে পুলিশকে। আগেই করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বাজি না ফাটিয়ে কালীপুজো উদ্যাপনের ডাক দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বাজি নিয়ে সরকারের এই আবেদন মানা উচিত বলে এদিন জানিয়েছে আদালত।
এদিকে, বাজি ব্যবসার সঙ্গে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত রাজ্যের ৩১ লক্ষ মানুষ। তাঁদের ক্ষতির কথা ভেবে সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত অন্তত ৫৩ হাজার ব্যবসায়ীকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল বাজি ব্যবসায়ী সংগঠন। সে ব্যাপারে এদিন জানানো হলে আদালত ক্ষতিপূরণের ব্যাপারটি রাজ্য সরকারের ওপর ছেড়ে দেয়।
এর আগে বাজি ব্যবসায়ীরা রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, ১৪ ও ১৫ নভেম্বর অর্থাৎ শনি ও রবিবার রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অর্থাৎ দু’দিনে মোট ৪ ঘণ্টা বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিক রাজ্য। কিন্তু তার আগেই দুর্গাপুজোর মতো কালীপুজোতেও বিধিনিষেধ আরোপ এবং কালীপুজো ও দীপাবলিতে সমস্ত রকমের বাজি নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। করোনা রোগীদের কথা ভেবে বাজি বন্ধের দাবিতে সরকারকে চিঠি দেয় রাজ্যের ৫ চিকিৎসক সংগঠন। একই দাবি জানায় পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চও।