তথাগত ও সৌগত – একুশের কুরুক্ষেত্রে কি ভূমিকা থাকবে দুই ভাইয়ের?
১৯৬৩ সালের ২৭শে ডিসেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরের হজরতবল মাজার থেকে একটি পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন চুরি হয়। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) এবং পূর্ব পাকিস্তানে হিংসাত্বক প্রতিবাদ শুরু হয় এবং শেষে ১৯৬৪ সালের ৪ঠা জানুয়ারি তা উদ্ধার হয়। এই সময় কলকাতার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া তথাগত দাঙ্গায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেন। এই দাঙ্গাই তাঁকে ব্যাথিত করে আরএসএসের (RSS) কাছে নিয়ে আসে এবং জন্ম হয় এক হিন্দুত্ববাদীর। তিনি গত ১৯শে আগস্ট মেঘালয়ের রাজ্যপাল পদ থেকে অবসর নেন।
বাংলাদেশের স্বচ্ছল পরিবারের তথাগত রায় জন্ম নেন কলকাতায়। তিনি ছোট থেকেই শুনতেন বাংলাদেশে তাঁদের জমি, খেত, গরুর দুধ, ঘিয়ের কথা। তিনি জানেন কিভাবে তাঁদের উচ্ছেদ করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় নিজেদের ভিটে থেকে। প্রথমে ১৯৪৭ সালে পড়ে আবার ১৯৭১ সালে অসংখ্য হিন্দু এই উচ্ছেদের শিকার হয়।
তাঁর ভাই সৌগত রায় বড় হন কমিউনিস্ট অত্যাচারের কথা শুনে। গান্ধীনীতিতে বিশ্বাসী এই ব্যক্তি বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ। দুইভাইকেই মেন্টর করেন লেখক, শিক্ষাবিদ ও সাংসদ প্রমথনাথ বিশি। তবে হিন্দুত্ব বিষয়টি সম্পূর্ণ তথাগতবাবুর অর্জিত, এটি তিনি নিজেও স্বীকার করেন।
তথাগতবাবু ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন। অন্যদিকে ওনার ভাই সৌগতবাবু ২০০৯ থেকে সাংসদ। তথাগতবাবু প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ময়দানে লড়েছেন একবারই, ২০১৪ সালে – দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে পরাজিত হন তিনি। সৌগতবাবু অবশ্য তিন তিনবার লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছেন, পেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বও।
সৌগতবাবুর (Saugata Roy) বিষয়ে বলতে গিয়ে তথাগতবাবু বলেন, আমাদের চিন্তাধারা আলাদা হলেও আমাদের নিয়মিত ফোনে কথা হয়। আমরা রাজনীতি, ইতিহাস, পাকিস্তানি ও চৈনিক আগ্রাসন, অনাবাসী ভারতীয়দের রাজনীতিতে প্রভাব সহ নানা বিষয়ে আলোচনা করি।
তথাগতবাবু (Tathagata Roy) সম্পর্কে সৌগতবাবুর মত, ও আজ পর্যন্ত বিধানসভা নির্বাচন জেতেনি। তৃণমূল স্তরে মানুষের সাথে যোগ নেই ওর। রাজ্যপাল হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকলেও, সরাসরি জনপ্রতিনিধিত্ব করেনি। তাই, আমার মনে হয় না ও মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।
২০২১ সালের নির্বাচন এগিয়ে আসছে। হাতে মাত্র কয়েক মাস। বাংলার মানুষ মুখিয়ে আছে একুশের কুরুক্ষেত্রে দুই ভাইয়ের দ্বৈরথ দেখার জন্য।