বাজি পোড়াবেন ভাবছেন? সাবধান!
শব্দবাজি না পুড়িয়ে পরিবেশ বান্ধব দীপাবলি পালনের আহ্বান বেশ কয়েক বছর ধরেই সারা দেশজুড়ে জানানো হচ্ছে। তারপরেও হয়তো বাজি ফাটবে। যাঁরা সত্যিই সচেতন নাগরিক তাঁরা হয়ত পটকা, বোমা থেকে দূরে থাকলেও আলোর বাজি পোড়াবেন অমানিশার আঁধার দূরে সরাতে। অনেক সময়েই সাবধানতা অবলম্বন না করায় বাজি পোড়ানোর আনন্দ ম্লান হয়ে যায় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে।
তাই বাজি পোড়ানোর আগে জেনে নিন কী কী সাবধানতা অবলম্বন করবেনঃ
বাজির জ্বালাপোড়া কমাতে কী করবেন?
১. ফোস্কা কমাতে বরফ নয়
যেখানেই পুড়ে যাবে আগে সেই জায়গা ঠাণ্ডা জলের তলায় ধরুন। মিনিট পাঁচেক এভাবে কলের জল লাগান পোড়া অংশে। এতে পোড়ার তাপ কমবে। কমবে জ্বলুনিও। ভুলেও বরফ বা বরফ জল দেবেন না। অনেকেই জানেন, জল দিলে নাকি ফোস্কা পড়ে। তাই বরফ দেন। এটা একদম ভুল ধারণা। ফোস্কা আটকাতে পারে না বরফ বা বরফ জল।
২. চোখে ফুলকি ছিটলে
সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে যান। চোখের কোনও অংশে ফুলকি ছিটলে যেকোন সময় চোখ নষ্ট হতে পারে।
৩. বাজির আগুনে পুড়ে গেলে
এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন –
- আগুন নেভাতে ঠাণ্ডা জল ঢালুন পুড়ে যাওয়া ব্যক্তির শরীরে।
- আগুন নিভলেই সবার আগে গায়ের পোশাক ছাড়িয়ে দিন।
- কম্বল জড়িয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করবেন না। এতে আহত ব্যক্তির আরও ক্ষতি হবে।
- কম্বল মোটা এবং তাপের সুপরিবাহী। তাই কম্বল জড়ালে ভেতরে আগুনের তাপ থেকেই যাবে। এতে আহত ব্যক্তির কষ্ট বাড়বে। পোড়ার পরিমাণও বাড়বে।
- পাতলা কাপড় জড়িয়ে আহতকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান।
৫. ধোঁয়া থেকে শ্বাসকষ্ট হলে
বাজির আগুন থেকে অনেক সময়েই শ্বাসকষ্ট হতে পারে। টানা ৩-৪ দিন বাজির ধোঁয়ায় থাকতে থাকতে অনেকেরই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই অবস্থায় আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সবার আগে জরুরি।
সাধারণত এই কষ্ট হয় খোলা জায়গার বদলে বদ্ধ জায়গায় বাজি পোড়ালে। বাজির বিষাক্ত গ্যাসে শ্বাস নিতে গেলে ফুসফুসে কার্বন ডাই অক্সাইড বেশি ঢুকে যায়।
কতটা পুড়লে হাসপাতালে যাবেন
- বড়দের ক্ষেত্রে শরীরের ২০ শতাংশ এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেলে অবশ্যই হাসপাতালে যাবেন।
- বাজির ধোঁয়া থেকে শ্বাসকষ্ট হলে সেখান থেকে রোগীকে সরিয়ে নিন। দরজা-জানলা খুলে দিন।
- মুখ পুড়ে গেলে দেরি না করে হাসপাতালে যান।
- হাত বা অন্য কোথাও পুড়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে হাসপাতালে যান।
- বয়স্ক, সদ্যোজাত, ডায়াবেটিক রোগী আহত হলে সবার আগে হাসপাতালে যাওয়া প্রয়োজন।
মাথায় রাখুন:
১. পোড়ার ক্ষত কমতে সময় লাগে। দ্রুত ঘা সারাতে অ্যান্টিবায়োটিক মলম ব্যবহার করবেন না।
২. বদলে ওয়াটার বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ফোস্কা পড়লেও ভয় পাবেন না। আপনা থেকেই সেটি শুকিয়ে আবার নতুন চামড়া তৈরি হয়। তবে বড় ফোস্কা পড়লে চিকিৎসকের কাছে যান। তিনি ফোস্কা ফাটিয়ে ড্রেসিং করে দেবেন।
৪. পোড়ায় ড্রেসিং জরুরি না জরুরি না? ক্ষত অল্প হলে ওষুধ বা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে খোলা রেখে দিন। পুড়ে যাওয়ার পরিমাণ বেশি হলে বা ক্ষত গভীর হলে ড্রেসিংয়ের প্রয়োজন পড়ে।
৫. কিডনি বা লিভারের সমস্যা না থাকলে পোড়ার ব্যথা কমাতে হাল্কা পেনকিলার আহতকে দিতেই পারেন।