৯ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৫ হাজার টাকা করে অনুদান রাজ্য সরকারের
‘জাগো’ প্রকল্পে (Jago Prakalpo) এবারও রাজ্যের আট লক্ষ ৯৭ হাজার ২৫৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে আর্থিক সহযোগিতা করবে রাজ্য সরকার। প্রতিটি গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা করে পাঠানো হবে। সেই প্রক্রিয়া কোথাও কোথাও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলায় সবচেয়ে বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী (Self Help Group) এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। এখানকার ৭৭হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে রাজ্য সরকার টাকা পাঠাবে। এছাড়া দক্ষিণ ২৪পরগনার ৭৬হাজার, পূর্ব মেদিনীপুরের ৭৪হাজার, নদীয়ার ৬৫হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার করে টাকা পাঠানো হবে। অন্যান্য জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিও এই প্রকল্পের টাকায় কাজ করতে পারবে। গোষ্ঠীর সদস্যারা ছাগল, হাঁস, মুরগি চাষের মতো বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প আগেও বাস্তবায়িত করেছে। মুর্শিদাবাদ জেলার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিক(পিডি) দেবাহুতি ইন্দ্র বলেন, এবছর আমাদের জেলায় সবচেয়ে বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী জাগো প্রকল্পে সহায়তা পাচ্ছে। জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি বরাবরই ভালো কাজ করে। অনেক গোষ্ঠী স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, যেসমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী কমপক্ষে ছ’মাস আগে তৈরি হয়েছে তারাই এই প্রকল্পের আওতায় আসবে। গোষ্ঠীগুলির রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে। পাঁচ হাজার টাকা থেকে গোষ্ঠীর সদস্যরা লোন নিতে পারবেন। তবে তাঁদেরকে তা নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ করতে হবে। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা বেবি খাতুন বলেন, গতবারও এই প্রকল্পের সুবিধা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি পেয়েছিল। গ্রামের মহিলাদের কাছে পাঁচ বা এক হাজার টাকাও অনেকটাই বড় বিষয়। ওই টাকাতেই তারা কিছু হাঁস, মুরগির বাচ্চা কিনে পালন করতে পারেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় অনেকেই এমনটা করে আসছেন। রাজ্য সরকারের এই টাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্যা বলেন, এখন রাজ্য সরকার পাশে থাকায় লোন পেতে সমস্যা হয় না। পাশাপাশি অতিরিক্ত পাঁচ টাকা পাওয়া গেলে যে কোনও কাজের গতি আসে। জেলার ভগবানগোলা, সূতি, জলঙ্গি, রানিনগরের মতো প্রত্যন্ত এলাকাতেও এখন স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। গ্রামের মহিলারা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে শুরু করেছে। একসময় এই জেলার একটা বড় অংশের মহিলাদের কাজ ছিল শুধু বিড়ি বাঁধা। তাতে সংসার ভালোভাবে চলত না। কিন্তু এখন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা মাছ, হাঁস, মুরগি সহ বিভিন্ন ধরনের চাষ করে আয়ের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। অনেক স্বনির্ভর গোষ্ঠী স্কুলের পোশাক তৈরি করে আয় করছে। আধিকারিকরা বলেন, একসময় মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো জেলাগুলিতে মেয়েরা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে তেমন কাজ করতে চাইতেন না। কিন্তু এখন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দৌলতে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের গঠনমূলক কাজ করে সংসার চালাতে পারছেন।