রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

দূষণ রোধে এবার কোচবিহারে ধানের নাড়া প্রক্রিয়াকরণ, পাইলট প্রকল্প কৃষিদপ্তরের

November 11, 2020 | 2 min read

রাজ্যের মধ্যে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কোচবিহারে চালু হতে চলেছে ‘পুসা ডিকম্পোজ ক্যাপসুল’। ধান গাছ (Paddy) কেটে নেওয়ার পর মাঠে যে নাড়া বা খড় পড়ে থাকে তা এই ক্যাপসুলের প্রয়োগে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে। নাড়া পোড়ালে ব্যাপক হারে পরিবেশ দূষণ হয়। তাই এর বিরুদ্ধে আগে থেকেই প্রচার চালানো হচ্ছে। পরিবর্তে ‘নাড়াই সম্পদ’ এই প্রচারকেও সামনে আনা হচ্ছে। নাড়া জমিতে রেখে শূন্য কর্ষণে কীভাবে চাষ করা যায় তা নিয়েও নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে কোচবিহারে পুসা ডিকম্পোজ ক্যাপসুল ব্যবহার করা হবে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় ১০০ একর জমিতে এই ক্যাপসুল ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

নয়া দিল্লির ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচার রিসার্চ ইন্সস্টিটিউট থেকে দিন কয়েকের মধ্যেই এই ক্যাপসুল চলে আসবে বলে জেলা কৃষিদপ্তর জানিয়েছে। এরপর সেই ক্যাপসুলকে গুড় ও চালের গুঁড়োর সঙ্গে মিশিয়ে দিন কয়েক রেখে নাড়া যুক্ত জমিতে ব্যবহার করা হবে। ওই ক্যাপসুলের ভিতরে থাকা পচনকারি জীবাণু সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে জমিতে থাকা নাড়াকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবে। বিশেষ করে আলু চাষের জমিতে এটা ব্যবহার করা হবে।

জেলা কৃষিদপ্তরের (Agriculture Dept) আধিকারিক অরুণকুমার বসু বলেন, ১০০ একর জমিতে পুসা ডিকম্পোজ ক্যাপসুল ব্যবহার করা হবে। জমিতে থাকা ধানের নাড়াকে জমির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার জন্যই এটা ব্যবহার করা হবে। জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশিক্ষণ) রজত চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যের মধ্যে কোচবিহার জেলাতেই পুসা ডিকম্পোজ ক্যাপসুল পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে জমিতে ব্যবহার করা হবে। রা‌জ্য সরকারের নির্দেশ মতো এটা আনা হচ্ছে। নাড়াকে জমির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য চাষের ক্ষেত্রে নাড়াকে জমিতে রেখে শূন্য কর্ষণে বেশকিছু চাষ করা সম্ভব। কিন্তু আলু চাষে সেটা সম্ভব নয়। সেই কারণেই এই ক্যাপসুল ব্যবহার করা হবে। নাড়াই সম্পদ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আমরা প্রচার করছি।

জমি থেকে আমন ধান কেটে নেওয়ার পর নাড়া বা খড় পড়ে থাকে। সেই খড় একদিকে যেমন গোরুর খাবার, তেমনই জমির জন্যেও উপকারী। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নাড়া পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে যেমন দূষণ ছড়ায় তেমনই মাটিতে থাকা নানা উপাদানের ক্ষতি হয়। সেকারণেই নাড়া না পুড়িয়ে সেই জমিতেই প্রক্রিয়াকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষিদপ্তর জানিয়েছে, নাড়া জমিতে রেখে শূন্য কর্ষণে ধান, ভুট্টা, গম, সর্ষে, পাট প্রভৃতি চাষ করা সম্ভব হয়। কিন্তু আলুর ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে শূন্য কর্ষণে চাষ করা যায় না। কোচবিহারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমন ধানের নাড়া পোড়ানো হয় না। সেগুলি গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অনেক জায়গায় আবার পুড়িয়ে ফেলা হয়। এবার এই ক্যাপসুল এলে তা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে দিন কয়েক রেখে তা নাড়ার উপরে ছিটিয়ে দেওয়া হবে। দিন কয়েকের মধ্যেই সেই নাড়া জমির সঙ্গে মিশে যাবে বলে কৃষিদপ্তরের দাবি। এতে জমির উর্বরাশক্তিও বৃদ্ধি পাবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#paddy, #agriculture

আরো দেখুন