তপসিয়া অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাকা বাড়ি বানিয়ে দিতে পুরসভাকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
তপসিয়ায় পুড়ে যাওয়া বসতির বাসিন্দাদের বাংলার বাড়ি প্রকল্পে পাকা ঘর তৈরি করে দেবে রাজ্য সরকার। সেচ দপ্তরের জমিতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তির বাসিন্দারা জবরদখল করে আস্তানা তৈরি করে বসবাস করছিলেন। মঙ্গলবার রাতে ভয়াবহ আগুনে প্রায় ৮০টি পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে যাওয়ার পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। বস্তুত তাঁরই নির্দেশে সেচ দপ্তরের জমিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সবাইকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে বলে বুধবার জানিয়েছেন পুরমন্ত্রী ও পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
ফিরহাদ হাকিমের কথায়, “পাকা বাড়ি হলে আগুন লাগার ভয় অনেকটা কমবে। সবাইকে ফ্ল্যাট বাড়িতে সরিয়ে দেওয়া হবে। শহরের এমন বসতিবাসীকে বিশেষ প্রকল্পে বাংলার বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী একটি বিশেষ প্রকল্প অনুমোদন করেছেন।” তবে কবে থেকে এই বাড়ির কাজ শুরু হবে তা এখনও জানাতে পারেননি কলকাতা পুরসভার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকরা।
এদিন ঘটনাস্থলে ফরেনসিক তদন্তকারী টিম আসার কথা থাকলেও আসেনি। যদিও সারাদিন ধরেই পুরসভার বর্জ্য অপসারণ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা পুড়ে যাওয়ার ঝুপড়ির ভগ্নাবশেষ সরিয়ে ফেলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, যদি ফরেনসিক তদন্ত হয় তবে এই পুড়ে যাওয়া সামগ্রী সরিয়ে ফেললে তথ্যের নমুনা পাওয়া যাবে কী করে ? বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি কেউই। দমকলও এদিন তপসিয়ার অগ্নিকান্ড নিয়ে কোনও এফআইআর করেনি।
বেআইনি রাসায়নিক কারখানা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মঙ্গলবার তপসিয়ার খালপাড়ে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যায় ৭০-৮০টি ঝুপড়ি। রাতে ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রীও গিয়ে পরিদর্শন করেন। এদিন বেলায় গিয়ে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে পুরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সাফাই করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুরসভার তরফে ত্রাণ ও খাবার সামগ্রী দিয়েছে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক মন্ত্রী জাভেদ খানও (Javed Khan)। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পাকা বাড়ির ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুরসভা।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ঝুপড়ির মধ্যেই একটি ছোট মাপের বেআইনি রাসায়নিক কারখানা গড়ে উঠেছিল। সেই কারখানার ভিতরেই ছুঁড়ে ফেলা কারও সিগারেট টুকরো থেকে প্রথম আগুন লেগেছে। কোনও একটি রাসায়নিকের পাত্র বা রঙের ড্রাম জাতীয় আধারে আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে আকাশের দিকে ছিটকে যায়। আর সেখান থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে খালপাড় বস্তিতে। অগ্নিকান্ড নির্বাপনের সময় বরো কো অর্ডিনেটর সুশান্ত ঘোষকে মন্ত্রী জাভেদ খানের অনুগামীরা মারধর করা নিয়ে দলীয় স্তরে তদন্ত হচ্ছে বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে পুরসভার মুখ্যপ্রশাসককে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান,“আগুনের কারণে কেউ একটু উত্তেজিত হয়ে ধাক্কাধাকি করে ছিল। পুরো বিষয়টি দলীয়স্তরে দেখা হচ্ছে।”