শহরে কোভিড টেস্ট বাড়ানোর পরামর্শ পুরসভার
শহরে রোজ আটশোর বেশি মানুষ করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু পুর নথিতে বাড়ছে না নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা। এতে পুর প্রতিনিধিদের একাংশের নিষ্ক্রিয়তা চোখে পড়ছে। কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipality) বিশেষ বৈঠকে ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরদের আরও উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদিও, অনেকেই পুরসভার বিনামূল্যে টেস্টের সুযোগ নিচ্ছেন না বলেও টেস্টের সংখ্যা কম থাকছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার, সকল ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরদের নিয়ে কো-অর্ডিনেশন বৈঠক ডেকেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। সঙ্গেই বিজয়া সম্মেলনী সভা। ছিলেন প্রশাসক বোর্ডের অন্য সদস্যরা, পুর কমিশনার এবং অন্য বিভাগীয় আধিকারিকেরা। কাজের ক্ষেত্রে কোথায় কী সমস্যা, কোন ওয়ার্ডে কী প্রয়োজন, সেসব নিয়েই এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সেখানেই স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা প্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য অতীন ঘোষ ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, শহরের ৭২টি ওয়ার্ডে স্থায়ীভাবে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেখানে অন্তত ৪০টি কেন্দ্রে দিনে কোনও টেস্ট হয় না। ২০-২৫টি কেন্দ্রে দিনে ৪-৫টির বেশি টেস্ট হচ্ছে না। তাই এই টেস্ট বাড়াতে পুর প্রতিনিধিদের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
পুরসভার তথ্য বলছে, শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ পজিটিভ কেস দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতায় দেখা মিলছে। অন্তত ৪০-৪৫টি ওয়ার্ড যেখানে দিনে গড়ে ২০-২৫ করে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু সেই ওয়ার্ডগুলিতে টেস্ট (Covid Test) অত্যন্ত কম হচ্ছে। আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের আরও পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টেস্ট করানোর প্রয়োজন রয়েছে। টেস্ট বাড়লে সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমানো সম্ভব হবে বলেই মনে করছে কর্তৃপক্ষ। পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে বলেই মনে করছে প্রশাসক বোর্ড। যদিও একাংশের নাগরিক পুরসভার বিনামূল্যে পরিষেবা গ্রহণ করছেন না বলেও দাবি করেছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, এখন বাড়িতে করোনা টেস্ট করানোর সুযোগ রয়েছে। পুরসভার এই পরিষেবা বিশেষত নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য। কিন্তু সৌভাগ্যবশত তাঁদের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। উচ্চবিত্তদের অনেকে বাড়িতেই টেস্ট করিয়ে নিচ্ছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসছেন না। তা সত্ত্বেও এই টেস্ট চালিয়ে যাওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন ফিরহাদ সাহেব।
অন্যদিকে, অ্যান্টিজেন টেস্টের জন্য পিপিই (PPE) পরে টেস্ট করানোর ক্ষেত্রে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর থাকলে কাজের সুবিধা হয়। অনেক জায়গায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর করা যায়নি বলেই ১৪৪টি ওয়ার্ডে স্থায়ী কেন্দ্র চালু হয়নি। এখন ধীরে ধীরে শীত পড়ছে। আগামী দিনে ১৪৪টি সেন্টার চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী কলকাতা পুরসভা।
এছাড়াও, এদিনের বৈঠক প্রশাসক বোর্ডের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিরোধীরাও সন্তোষ প্রকাশ করে। নিজেদের এলাকার নানাবিধ সমস্যার কথা জানিয়েছেন পুর প্রতিনিধিরা। সম্প্রতি বেহালার তিনটি বরো নিয়ে পৃথক বৈঠক করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তেমনই তাঁকে বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে মিটিংয়ের অনুরোধ জানিয়েছেন অন্যান্য বরো কো-অর্ডিনেটররা।