রূপা নয়, বঙ্গ বিজেপির পোস্টার গার্ল এখন লকেট?
দলের মধ্যের নাকি এই দুজনের সম্পর্কের তিক্ততা ‘ওপেন সিক্রেট’। বলছি রাজ্য বিজেপির দুই মহিলা নেতা রূপা গাঙ্গুলি ও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কথা। রাজনৈতিক মহল বার বারই দাবি করে এসেছে যে এই পুরনো একনিষ্ঠ কর্মীর ক্ষমতা খর্ব করে ডানা ছাটা হয়েছে, যাতে তৃণমূল থেকে সদ্য আসা লকেট চট্টোপাধ্যায় ক্ষমতার আকাশে ডানা মেলে উড়তে পারেন।
রাজ্য বিজেপিতে বহু আগে থেকেই রয়েছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। যখন রাজ্যে বিজেপি বলে কোন দলের প্রায় অস্তিত্ব ছিল না বললেই চলে, তখনও বার বার বিভিন্ন সভা, পদযাত্রায় আমরা রূপা গাঙ্গুলিকে গলা ফাটাতে দেখেছি। তখন তিনিই ছিলেন বিজেপির মহিলা সমিতির সর্বেসর্বা। সেইসময়টার কথা বলছি যখন গোটা রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের হাতে গোনা যেত। ছিল না একটাও সিট। তখন কিন্তু সেই হাতে গোনা কর্মীদের মধ্যে একজন ছিলেন রূপা।
দিন বদলালো। রাজ্যে বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হয়ে আত্মপ্রকাশ করল। বিজেপিতে যোগ দিতে চাওয়া লোকের সংখ্যাও বাড়ল। ঝাঁকে ঝাঁকে যোগ দিলেন সুবিধাবাদী ক্ষমতালোভীরা। যারা ক্ষমতার লোভে এ ঘাট ও ঘাট করে বেড়ায়। যোগ দেন বর্তমান সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিজেপিতে যোগ দিলেন লকেট।
উল্লেখ্য এর কিছুদিন আগে অবধিও তিনি ছিলেন তৃণমূলের প্রিয়। ছিলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য। ২০১৩, ২০১৪ সালেও তাকে দেখা গেছে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপূজোয়। কিন্তু টিকিট পাওয়া দায়, তাই হয়তো ক্ষমতার লোভে তিনি খুব সহজেই চলে গেলেন অন্যদলে। আর সেই দল আরো সহজে আপন করে নিল তাদের নতুন কর্মীকে। এতোটাই আপন করল যে পুরনো কর্মীদের ক্ষমতা খর্ব করে দেওয়া হল তাঁকে। আর সেই পুরনো কর্মীটি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। লকেট আসতেই রূপা চলে গেলেন পেছনের সারিতে। ২০১৭ তেই বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে। আনা হল লকেটকে। লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেলেন রূপা। বিজেপির প্রথম সারির নেত্রী হিসেবে উঠে এলেন লকেট।
আর রূপা? এক রাজ্যসভার সাংসদ হয়েই থেকে যেতে হল রূপাকে। এমনকি ২০১৯-এর সাংসদ পদপ্রার্থী হিসেবে নামও এলো না রূপার। সাংসদ হলেন লকেট। রাজ্য বিজেপির অন্দরে জোর জল্পনা চলেছে যে নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রীসভায় খুব শিগগিরই ঠাঁই পেতে পারেন তিনি ।
২০২২এ রাজ্যসভার মেয়াদ শেষের পর রূপার রাজনৈতিক জীবনে কী এখানেই ইতি টানতে হবে? সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা?