শ্রমদিবসের লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে নজির বাংলার
একশো দিনের কাজে ফের রেকর্ড সাফল্য রাজ্যের। মাত্র সাড়ে ছ’মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশ পূরণ। বাকি মাত্র ১০ শতাংশ। এই টার্গেট সম্পূর্ণ করে নতুন করে শ্রমদিবস বাড়াতে কেন্দ্রকে আর্জি জানাবে রাজ্য। আর সেই আর্জি মঞ্জুর হলে একটি মাত্র আর্থিক বছরে দ্বিতীয়বার শ্রমদিবস বাড়বে বাংলায়। যা দেশের মধ্যে অনন্য নজির বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ, ২০২০-২০২১ আর্থিক বছরের লক্ষ্যমাত্রা এখনও পূরণই করতে পারেনি বহু রাজ্য। সেই জায়গায় দু’মাস আগে ২২ কোটির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে অতিরিক্ত ৯ কোটি শ্রমদিবস কেন্দ্রের কাছ থেকে ছিনিয়ে এনেছিল রাজ্য। সব মিলিয়ে টার্গেট ছিল ৩১ কোটি। সোমবার পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে ২৮ কোটি শ্রমদিবস। লকডাউনের প্রথম এক মাস ছাড়া কাজ চালু করার যে সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিয়েছিলেন, তারই সুফল মিলছে একশো দিনের কাজে।
চলতি আর্থিক বছর শেষ হতে বাকি আর সাড়ে চার মাস। তার অনেক আগেই ১০ শতাংশ শ্রমদিবস তৈরির টার্গেট ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব বলে মনে করছেন পঞ্চায়েত দপ্তরের শীর্ষ কর্তারা। তাই এখন থেকেই শ্রমদিবস বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করেছে পঞ্চায়েত দপ্তর (Panchayat Department)। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানাবে তারা।
গত আর্থিক বছরে রাজ্যে শ্রমদিবস (Working Days) তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ কোটি। ২০২০-২০২১’র জন্য তা কমিয়ে করা হয় ২২ কোটি। লকডাউনের মধ্যে ১০০ দিনের কাজে অনুমতি পাওয়ার পর একটুও সময় নষ্ট করেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে যায় কর্মযজ্ঞ। কাজে লাগানো হয় প্রায় ছ’ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে। ছ’মাসের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে ২২ কোটি শ্রমদিবস তৈরিতে সক্ষম হয় পঞ্চায়েত দপ্তর। পরে রাজ্যের দাবি মেনে রাজ্যে শ্রমদিবস ৩১ কোটি বাড়িয়ে দেয় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। সেটাও নির্ধারিত সময়ের আগে পূরণ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন নবান্নের আধিকারিকরা। তাঁদের মতে, কৃষিক্ষেত্র, নতুন রাস্তা তৈরি, বাড়ি নির্মাণ, সেচ খাল তৈরি সহ বিভিন্ন কাজে ১০০ দিনের শ্রমিকদের যুক্ত করা হয়েছে। কাজে গতি বাড়ার পিছনে এটাই মূল কারণ। আর তাতেই বৃদ্ধি পেয়েছে শ্রমদিবস। কাজ পেয়েছে ৬৯ লক্ষ ৩৫ হাজার পরিবার। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে মোট বরাদ্দের ৮০ শতাংশ টাকা। অর্থাৎ, প্রায় সাত হাজার চারশ কোটি টাকারও কিছু বেশি।
এখানে থেমে না থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, গ্রামোন্নয়নে আরও বেশি কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। যাতে গ্রামের সকল গরিব মানুষ দৈনিক ২০২ টাকা করে রোজগার করতে পারেন। সেই মতো জেলায় জেলায় দ্রুত গতিতে এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে নির্দেশও পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। এরই পাশাপাশি, এটাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, একশো দিনের কাজে গড়মিল বা অস্বচ্ছতা বরদাস্ত করবেন না মুখ্যমন্ত্রী। সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের।