মনে করেন মা জগদ্ধাত্রী মহামায়ারই আরেক রূপ? ভুল জানতেন
জগদ্ধাত্রী দেবী আসলে কোনও বিশেষ দেবী নন, ইনি পরম ব্রহ্মের জাগতিক রূপমাত্র! একটু বিশদে বুঝিয়ে বলা যাক। মহিষাসুরকে দেবী দুর্গা বধ করার পর দেবতারা শান্তি পেয়ে ভেবেছিলেন এবার আর তাঁদের কোনও সমস্যা রইল না। তাই তাঁরা আবার পুরনো গর্বে অভিভূত অবতারে ফিরে গেলেন। মানে, তাঁরাই দণ্ডমুণ্ডের কর্তা, তাঁরা ছাড়া আর কারও কোনও শক্তিই নেই আর কী! এই দেখে ভারী ক্ষেপে যান ব্রহ্মা। তিনি যক্ষরূপ ধারণ করে চ্যালেঞ্জ করেন দেবতাদের। প্রথমে ডেকে পাঠান পবনদেবকে, বলেন, একটি ঘাসকে হাওয়া দিয়ে নাড়িয়ে দেখাতে। শত চেষ্টা করেও সফল হন না পবনদেব। একই অবস্থা হয় বরুণদেবের। তিনিও একটিমাত্র ঘাসকে ভেজাতে সক্ষম হন না। অগ্নিদেবও একটি মাত্র ঘাসকে পোড়াতে পারেন না। এদিকে তাঁরা অত শক্তিশালী সব দেবতা, দরকার পড়লে সারা বিশ্বে প্রলয় এনে দিতে পারেন! তখন ব্রহ্মা নিজ রূপ ধারণ করে তাঁদের বোঝান যে, আসলে সবার উপরে পরম ব্রহ্মই সত্য এবং দেবতাই হোন কিংবা মানব অথবা দৈত্য, এই জগতে সবচেয়ে বড় একটি অসুরের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই করতে হবে আর সেটি হল তাঁদের মানসিক অহংয়ের অসুর। আর এই অসুরকে বধ করতেই পরম ব্রহ্ম যে দেবীর রূপ নেন, তিনিই জগদ্ধাত্রী।
জগদ্ধাত্রী দেবীর চার হাত, চার হাতে আছে শঙ্খ, চক্র, তির-ধনুক। দেবী বধ করছেন হস্তীরূপী করিন্দ্রাসুরকে, যা আসলে আমাদের ভিতরে বসবাসকারী অহংয়ের মূর্ত রূপমাত্র। তাই মা আমাদের সকলের মধ্যেই থাকেন, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমায় তাঁকে পূজা করা হয় মাত্র। দেবীকে নিয়ে একটিই মাত্র শ্লোকের উল্লেখ পাওয়া যায়, শ্রী ললিতা সহস্রনাম-এর ১৭৩-তম শ্লোকে দেবী ত্রিপুরাসুন্দরীকেই জগদ্ধাত্রী রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই শ্লোকটি হল, বিশ্বমাতা জগদ্ধাত্রী, বিশালাক্ষী, বিরাগিণী/প্রগলভা পরমোদরা, পরামোদা মানময়ী।