জয়গাঁকে পুরসভা করার ইঙ্গিত শ্রমমন্ত্রীর
জয়গাঁতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জনসভায় জমায়েতকে ছাপিয়ে গেল তৃণমূলের সভা। গত সপ্তাহেই ভূটানসীমান্ত জয়গাঁয় জনসভা করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন দিলীপবাবু। তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচই বাধে। তারই পাল্টা জবাবে একই জায়গায় বুধবার জনসভার আয়োজন করে তৃণমূল। মূল বক্তা রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক (Moloy Ghatak) আভাস দেন, জয়গাঁকে পুরসভা করতে পারে রাজ্য। আসলে দীর্ঘদিন ধরেই ওই দাবি উঠছে স্থানীয় এলাকা থেকে।
গত বৃহস্পতিবার জয়গাঁয় দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghsoh) দিয়ে জনসভা করেছিল বিজেপি (BJP)। অভিযোগ, জয়গাঁতে সভা করার আগে দিলীপ ঘোষের কনভয়ের উপর হামলা ও বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারির গাড়ি সহ তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দাবি, ওই দিন বিজেপির সভায় যা লোক হয়েছিল এদিন তাদের সভায় চারগুণ বেশি লোক জমায়েত হয়েছিল। তবে তৃণমূলের এদিনের সভায় দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মা ও সভাধিপতি শীলা দাস সরকার অনুপস্থিতি থাকায় শাসক দলের মধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এদিন জয়গাঁ থানা সংলগ্ন এনএস রোডে তৃণমূলের (Trinamool) জনসভাটি হয়। সভায় মোটের উপর দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারাই দেখা গিয়েছে। মলয়বাবু বলেন, কসমোপলিটন এলাকা জয়গাঁর মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পুরসভার। জয়গাঁকে পুরসভা করার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। জয়গাঁতে দমকল কেন্দ্র তৈরি হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির জন্য এতদিন চালু করা যায়নি। কলকাতায় ফিরে দমকল কেন্দ্রটি দ্রুত চালু করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলব।
ভারত-ভুটান আন্তর্জাতিক সীমান্তে জয়গাঁ। ভুটানে লকডাউনের জন্য জয়গাঁয় ভুটান গেট বন্ধ থাকায় এখানকার মানুষ ভুটানে যেতে পারছেন না। ভুটান গেট বন্ধ থাকায় জয়গাঁর মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিরমুখে পড়ছেন। স্থানীয় স্তরে সভায় ভুটান গেট খোলার দাবি ওঠায় শ্রমমন্ত্রী বলেন, এটা বৈদেশিক বিষয়। দিল্লির সরকারের বিষয়। ভুটান গেট যাতে দ্রুত খোলে সেই ব্যাপারে রাজ্য সরকার নিশ্চই দিল্লির সঙ্গে কথা বলবে।
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হতে পারে এদিনের সভায় শ্রমমন্ত্রী তারও ইঙ্গিত দেন। রাজ্যের চা শ্রমিকরা বর্তমানে ১৭৫ টাকা দৈনিক মজুরি পায়। যা বিজেপি শাসিত পড়শি রাজ্য অসমের শ্রমিকদের মজুরির থেকে অনেকটাই বেশি। এদিন শ্রমমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের চা শ্রমিকদের মজুরি আরও বৃদ্ধি করা হবে। সেইজন্য খুব শীঘ্রই এ নিয়ে বৈঠকে বসা হবে।
সভায় অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে মোহনবাবু বলেন, আমাকে সভার কথা কেউ বলেননি। আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। সেইজন্যই সভায় যাইনি। সভাধিপতি বলেন, সভায় না যাওয়ার জন্য অন্য কোনও কারণ নেই। পারিবারিক কাজে কল্যাণীতে আছি। সেই জন্যই সভায় যেতে পারিনি।
দলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী (Mridul Goswami) অবশ্য বলেন, ব্যক্তিগতভাবে মোহনবাবুকে আমি নিজেই সভায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। মোহনবাবু স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত ছিলেন বলে সভায় আসতে পারেননি।