গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী, অভিযুক্ত বিজেপি
রাতে মাথাভাঙা-১ ব্লকের বালাসিতে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) ও বিজেপির (BJP) মধ্যে সংঘর্ষে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত ওই তৃণমূল কর্মীর কোচবিহার (Coochbehar) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবারও দিনভর এলাকায় উত্তেজনা ছিল। মাথাভাঙা (Mathabhanga) থানার পুলিস গণ্ডগোলের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করেছে। তৃণমূলের দাবি, শনিবার মাথাভাঙা শহরে তাদের সভা থেকে ফেরার পর স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী বাহিনী হামলা চালায়। ওই সময় তৃণমূল কর্মী আব্দুল জলিল মিঁয়া সেখানে গেলে তাঁকে লক্ষ্য করে হামলাকারীরা গুলি চালায়। পরে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। যদিও হামলা ও গুলি করার অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি। তাদের পাল্টা দাবি, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রাতে ঝামেলা হয়। নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দল চাপা দিতেই তাদের নামে বদনাম করা হচ্ছে। পুলিস নির্দোষ কয়েকজন বিজেপি সমর্থককে আটক করে তাদের হেনস্তা করেছে।
মাথাভাঙার বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মন (Binoy Krishna Barman) বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বিজেপি হাজরাহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। বারবার আমাদের দলের কর্মীদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। শনিবার এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে ওরা হামলা করে। একজন গুলিবিদ্ধ হন। আমরা পুলিসকে ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।
বিজেপির কোচবিহার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বর্মন বলেন, হাজরাহাট-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালাসিতে শনিবার রাতে যা হয়েছে তাতে আমাদের দলের কেউ জড়িত নন। ওটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আসলে তৃণমূলের বিভিন্ন গোষ্ঠী এলাকার ক্ষমতা দখলে রাখতেই বোমা-বন্দুক ব্যবহার করছে। নিজেদের দোষ আড়াল করতে আমাদের নামে বদনাম করছে ওরা। তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হওয়া পুলিস বিনা কারণে আমাদের কর্মীদের থানায় তুলে নিয়ে গিয়েছে। মাথাভাঙা থানার আইসি প্রদীপ সরকার বলেন, হাজরাহাটে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ওই ঘটনায় সাতজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এলাকায় পুলিস পিকেট রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও আমরা সতর্ক।
প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগে হাজরাহাট পঞ্চায়েতের বালাসিতেই এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাকে ঘিরে গোটা এলাকা বেশ কয়েকদিন উত্তপ্ত ছিল। শনিবার রাতে গুলির ঘটনার পর রবিবার এলাকার পরিবেশ থমথমে ছিল। গোটা এলাকায় কোনও বাড়িতেই পুরুষ ছিলেন না। মাথাভাঙা থানার আইসি নিজেই এলাকায় থাকেন দিনভর। আহত আব্দুল জলিল মিঁয়ার স্ত্রী জিন্নাত পারভিন বলেন, শনিবার রাত ৮টা নাগাদ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির সামনে ব্যাপক বোমাবাজি হয়। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই বোমাবাজি করে। ওই সময়ে আমার স্বামী বাড়ির বাইরে গেলে দুষ্কৃতীরা ওঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেয়। আমরা বিষয়টি পুলিসকে জানিয়েছি। তদন্ত চাইছি।