ধর্ম নির্বিশেষে জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার সবার আছে, রায় হাইকোর্টের
লাভ জিহাদ নিয়ে গোবলয়ে ঝড়। তারই মাঝে গুরুত্বপূর্ণ রায় শোনাল এলাহাবাদ হাইকোর্ট ( Allahabad High Court )। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে পছন্দমত জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের রয়েছে। এজন্য ধর্ম কোনও ফ্যাক্টর বা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
ব্যক্তিগত অধিকারের আওতায় এই রায় দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। হাইকোর্ট এর আগে জানিয়েছিল শুধুমাত্র বিবাহ (Marriage) সম্পন্ন করার জন্য ধর্ম পরিবর্তন করা কাম্য নয়। এই ধরণের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। বিচারপতি পঙ্কজ নকভি ও বিবেক আগরওয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানিয়েছে, বিবাহের ক্ষেত্রে বা জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কখনই ধর্ম বাধা হবে না, তেমনই ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে করাটাও আইনসঙ্গত নয়।
এদিন ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যেখানে আইন দুই সমলিঙ্গের মানুষকে একসাথে থাকার, জীবন কাটানোর অনুমতি দিচ্ছে, সেই দেশে শুধুমাত্র ধর্মের বিভেদের জন্য বিয়ে আটকে দেওয়া হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। কোনও যৌক্তিকতা নেই এই ধরণের আচরণের।
উল্লেখ্য প্রিয়াঙ্কা খারওয়াড় ও সালামাত আনসারি বিয়ে করতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। এলাহাবাদ হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করে তাঁরা আবেদন করেন যাতে তাঁদের গ্রেফতার না করা হয়। তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়ের করা হয়। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৬৩, ৩৬৬, ৩৫২, ৫০৬ ধারা ও পকসো অ্যাক্টের ৭/৮ ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয় মামলা। ২০১৯ সালের ১৯শে অগাষ্ট প্রিয়াঙ্কা ও সালামতের নিকাহ হয়। প্রিয়াঙ্কা বিয়ের জন্য ধর্ম পরিবর্তন করেন।
উল্লেখ্য, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, আসাম সরকার লাভ জেহাদ ঠেকাতে কড়া আইন আনার প্রস্তাব দিয়েছে। যোগীর রাজ্যে স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে সেই প্রস্তাব আইন দফতরে পৌঁছেও গিয়েছে। লাভ জিহাদের (Love Jihad) বিরুদ্ধে সোচ্চার গেরুয়া বাহিনী।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত বলেছিলেন, “দেশে সাম্প্রদায়িক সদ্ভাব নষ্ট করতে এবং দেশের মধ্যে বিভাজন আনতে ‘লাভ জেহাদ’ শব্দের আমদানি করেছে বিজেপি। ভালোবাসায় জিহাদের কোনো স্থান নেই। বিবাহ ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। এই বিষয়ে আইন আনা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক এবং এই আইন কোনও আদালতেই গ্রাহ্য হওয়ার কথা নয়।”