কবে আসবে করোনা ভ্যাকসিন? মমতার প্রশ্নে দিশাহীন মোদী
প্রশ্ন ছিল একটাই—কবে আসছে ভ্যাকসিন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরাসরি আর্জিই জানিয়েছিলেন, দ্রুত চাই। কিন্তু অপ্রত্যাশিত উত্তর এল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির থেকে… বলা সম্ভব নয়। এমনকী দাম কী হবে, ডোজই বা কী হতে চলেছে, সে ব্যাপারেও নির্দিষ্ট কোনও তথ্য দিতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী। বল ঠেলে দিলেন বিজ্ঞানীদের কোর্টে। অর্থাৎ, তুমুল উৎসাহ এবং অপেক্ষার বৈঠক শেষ হল দিশাহীনতায়। মুখ্যমন্ত্রীদের তাঁর সাফাই, ‘ভ্যাকসিন কবে আসবে সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারি না। এটা আমাদের হাতে নেই।’
নাম না করে বস্তুত রাহুল গান্ধীর সমালোচনাতেই জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘কয়েকজন ভ্যাকসিন নিয়েও রাজনীতি করছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। কেউ যদি এই নিয়েও রাজনীতি করতে চায়, কারও পক্ষে কি ঠেকানো সম্ভব? তারা রাজনীতি করুক। কিন্তু আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয় যে, কবে আসবে ভ্যাকসিন।’ কিন্তু তাঁর দলই তো রাজনীতি করছে বাংলায়। যে অভিযোগ বারবার তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী (Narendra Modi)। করোনা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে নানা ব্যর্থতার অভিযোগ করা হচ্ছে। মূলত গেরুয়া শিবিরই এহেন অভিযোগের স্রষ্টা। এমনকী, এদিন যে রাজ্যগুলির (মহারাষ্ট্র, দিল্লি, রাজস্থান, গুজরাত, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড়) মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মোদি, তাদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা অপেক্ষাকৃত ভালো। ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হয়ে পরিসংখ্যান দিয়ে সেকথা তুলেও ধরেছেন মমতা।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্গাপুজো, কালীপুজো-দীপাবলি এবং ছটপুজোর মতো ধর্মীয় উৎসব পালন করেছে রাজ্য। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাতে অংশ নিয়েছেন। চালু হয়েছে শহর ও শহরতলির লোকাল ট্রেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাতে যাতায়াত করছেন। তা সত্ত্বেও অন্য রাজ্যের তুলনায় এখানে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কমেছে। বেড়েছে সুস্থতার হার। তারপরেই ভ্যাকসিন নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি। কোনও আশার বাণী যে এখনই মিলবে না, এই শঙ্কা থেকেই সোমবার খাতড়ার সভায় সুর চড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
জবাবে ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) স্টোরেজ, হ্যান্ডলিং এবং ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এখন থেকেই দ্রুত প্রস্তুতি এবং রোডম্যাপ তৈরির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, ‘আমাদের অগ্রাধিকার একটাই। সকল ভারতবাসী যেন ভ্যাকসিন পায়। সেই লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে স্টোরেজ সহ নানাবিধ ব্যবস্থা এখন থেকেই নিতে হবে।’
কী সেই ব্যবস্থা? মোদির মতে, এখন থেকেই ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্টের সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ করা হোক। এছাড়া ভ্যাকসিন স্টোরেজ ও সাপ্লাইতে স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। তাদেরও তৈরি রাখতে হবে। তাঁর স্পষ্ট কথা, ভ্যাকসিন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে কাজ করবে। সহমত মুখ্যমন্ত্রীও। তার জন্য প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী এবং কোল্ড চেইন সহ যাবতীয় পরিকাঠামো তৈরি করে রেখেছে বাংলা।